কেন এই পাতা

পানুর ইচ্ছা, লেখক হইবেন । বাঙালি, লেখক না হইতে পারিলে নমো নমো করিয়া পাতের সংস্থান যদি বা হয় জাত রক্ষা হয় না - যথা আঁটকুড়া কুলীন । পানু বিস্তর পরিশ্রম করিলেন । দিস্তা দিস্তা রচনাবলী, অমনিবাস চিবাইলেন । প্রথমে কাব্য টানিয়াছিল, কারণ রস - রসে পাঁউরুটি ভিজিল না । পানু ঘটা করিয়া কিছুদিন রবীন্দ্রসঙ্গীত লিখিলেন (ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতিরম্যায়, আট হাজার বাষট্টি টাকার দরজা, খর্চা কে দ্যায় ! অথবা, কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া, চৌমাথার মোড়ে দিব পেন্টুল খুলিয়া) হাউ হাউ করিয়া লোকে মারিতে আসিল । সমস্ত অবজ্ঞা করিয়া পানু লিখিয়া চলিলেন । যদ্যপি পানুর কলমের তোড়ে কাব্যলক্ষী কোঁ কোঁ, সম্পাদকের দপ্তরে চিঁড়া ভিজিল না । অতঃপর পানুর দুঃখে ব্যাবেজ সায়েব কম্পিউটার আবিষ্কার করিলেন । বাজারে ব্লগ আসিল । পানু ব্লগার হইলেন । এই পাতা পানুর পাতা । যা তা ।

Friday, August 19, 2011

বাংলা সমান্তরাল বিশ্বকোষ (প্রথম সংস্করণ, আপডেট চলিবে)



--

অকার্য কর

খ্রীস্টাব্দ ৬২৫-এ গৌড় রাজ শশাঙ্ক, থানেশ্বর অধিপতি হর্ষবর্ধন প্রেরিত গুপ্তঘাতক আনীত বিষাক্ত পাটালি গুড় ও শসামুড়ি খাইয়া প্রাণত্যাগ করিলে গৌড় বঙ্গে যার পর নাই অরাজ্যের সৃষ্টি হয় । শশাঙ্কপুত্র মানব দেব মাত্র অষ্ট মাস কাল রাজত্ব করিয়া মানসিক অবসাদগ্রস্ত হইয়া শ্রীমৎ ওসো রজনীশের আশ্রমে গমণ করেন । বাণিজ্য, কৃষি ও ওকালতি ব্যবসায়ে মন্দার কারণে মুদ্রাস্ফীতি ঘটিয়া অনর্থ হইতে থাকে । কথিত মুদ্রাস্ফীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, বঙ্গদেশবাসী সেই স্ফীত মুদ্রায় দড়ি বাঁধিয়া আকাশপথে ঝুলিতে ঝুলিতে যবন, মগ ও ম্লেচ্ছে দেশে পলাইতে শুরু করে । দেশের এই দূরাবস্থায় দৈনিক সংবাদপত্রে পাত্র চাই বিজ্ঞাপন মারফৎ দেশীয় বণিক ও অমাত্য কূল উপযুক্ত শাসকের খোঁজ করিতে আরম্ভ করেন । কথিত, বণিক ও অমাত্য সভা ৩২০০০ বায়োডাটা সার্চ করিয়া অবশেষে উৎকল দেশবাসী তরুণ তকনিকবিদ শ্রী রাজঅ কার্যঅ কর-কে বঙ্গনৃপতি পদে নিয়োজিত করেন । রাজঅ কার্যঅ কর নামটি অচিরেই অপভ্রংশবশত রাজা অকার্য কর-এ পর্যবসিত হয় । শ্রী অকার্য কর এক পয়লা মাপের যন্ত্রবিদ ছিলেন কিন্তু তিনি যে যন্ত্রই তৈয়ার করিতেন তাহা প্রত্যাশিত কার্য না করিয়া অন্য অদ্ভূত ক্রিয়া করিত । প্রজাদের দরখাস্ত লিখিবার সুবিধার্থে রাজা অকার্য কর একটি যন্ত্র লেখনী আবিস্কার করেন যাহা আজিকার টাইপরাইটার-এর জনক । রাজা অকার্যকর উক্ত যন্ত্রটির নামকরণ করেন –“হস্তধৃতসংক্ষিপ্তটরেটক্কানিনাদীকীযেনদুরছাইহ্যাঁহ্যাঁমনেপড়েছেলেখনী যন্ত্র” – আজিকার বিশিষ্ট বৈজ্ঞানিক স্টিভেন টকিংএর মতানুসারে উক্ত যন্ত্র কেবল টাইপরাইটার-ই নহে, ইহা প্রকৃতপ্রস্তাবে মনুষ্য-প্রস্তুত কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা (artificial Intelligence) সম্পন্ন প্রথম যন্ত্র । রাজা অকার্য কর উক্ত যন্ত্রটিরে সৌহার্দের নিদর্শন স্বরূপ কালিকটের কেরাণী রাজা কুতুবমিনার কেবলম-কে উপহার দেন । রাজা কুতুবমিনারের বংশধর রাজা জামোরিন সেই অদ্ভুত যন্ত্রটি শ্রীমৎ ভাস্কো দা গামা’কে*** ভেট দেন । মহান পন্ডিত ভাস্কো দা গামা যিনি হার্মাদ্গিরির ফাঁকে ফাঁকে ধ্রুবতারার আলোয় বসিয়া ফার্স্ট বুক, বর্ণপরিচয়, কামসূত্র ও পিকউইক পেপারস পড়িয়া সম্পূর্ণ নিজ প্রচেষ্টায় বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান লাভ করিয়াছিলেন এবং তৎকালীন পর্তুগাল দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়া যার পর নাই আশাহত ছিলেন –এই যন্ত্রটি হাতে পাইয়া অভিভূত হইয়া পড়েন । উক্ত যন্ত্র ব্যবহার করিয়া তিনি তৎক্ষণাৎ পর্তুগালের তৎকালীন রাজা জন দুই-কে একটি পত্র লেখেন—যাহা শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের পক্ষে । পূরা পত্র পর্তুগীজ ভাষায় লিখিলেও ভাস্কো আবেগের বশে শেষ পংক্তিটি ইংরাজী (তৎকালীন শিক্ষিত সমাজের ভাষা)-তে লিখার লোভ সংবরণ করিতে পারেন নাই । দুর্ভাগ্যবশত আপন কেরদানি প্রদর্শনহেতু কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন যন্ত্রটি Pen is mightier than sword বাক্যবন্ধ-টিরে সামান্য বদলাইয়া Penis mightier than sword-করিয়া দেয় । জন দুই, ভাস্কো দা গামার পান্ডিত্যে অগাধ বিশ্বাস রাখিতেন ফলে পত্রটি তাহার নিকটে পৌছাইবা মাত্র তিনি এক গোপন ও মোক্ষম অস্ত্রের হদিশ পাইয়াছেন মনে করিয়া ফরাসী দেশের রাজা শার্ল সাত-কে দ্বন্দ্বযুদ্ধে আহ্বান জানান । এর পরের অংশ ঐতিহাসিকরা জিনিভা চুক্তির মাধ্যমে গোপন রাখিলেও ভাস্কো দা গামার উপর্যুপরি আক্রমণে কালিকট বন্দরের অক্কাপ্রাপ্তির ঘটনা আজ সর্বজনবিদিত ।

রাজা অকার্য করের অপর বিখ্যাত আবিষ্কার “বিনাঅগ্নিঅল্পসময়েশুল্যপক্কমাংস্প্রস্তুতকারীসললুপজাস্টআরএট্টুনুন যন্ত্র” যাহা আজিকার মাইক্রোওয়েভ ওভেনের জনক বলিয়া পরিচিত । উক্ত যন্ত্রটি শুল্যপক্ক মাংস প্রস্তুতে কার্যকারী হইলেও উহা বিজাতীয় ভাষায় ব্যবহারকারীর সহিত কথোপকথনে (সম্ভবত)-র প্রচেষ্টা করিত । বানভট্ট ইহার উল্লেখ কাদম্বরী নামক গ্রন্থে করিয়াছেন । বানভট্টের মতে উক্ত যন্ত্রটিতে লৌহ শলাকায় মাংস গাঁথিয়া ভরিয়া দিলেই যন্ত্রটি বলিয়া উঠিত –“ দোরবো কাচো দাআবারজ্বা লাতেএয়েচো” – প্রখ্যাত ভাষাবিদ উৎপ্রেক্ষা মৌলিকের মতে –ইহা কিরঘিজ ভাষায় সম্ভ্রমসহিত অভিবাদন । বলাই বাহুল্য তৎকালীন গৌড় বঙ্গে কিরঘিজ ভাষাজ্ঞান না থাকার কারণে উক্ত যন্ত্রটি সাধারণের ব্যবহারযোগ্য হইয়া উঠে নাই । রাজা অকার্য করের এই নিয়মিত আবিষ্কারের প্রেরণাকে স্তিমিত করিবার উদ্দেশ্যে সভাসদেরা অবশেষে হিন্দু রীতি নীতি তুচ্ছ করিয়া রাজাকে ৬৭ বার দার পরিগ্রহণ করান । উপরোক্ত ৬৭টি বিবাহ হইতে তাঁহার ২৩২ জন সন্তানের জন্ম হয় । তাঁহার কৃতী পুত্র পুত্রী দের মধ্যে-- আলস্য কর, আপত্তি কর, ইশারা কর, ঈর্ষা কর, উল্লাস কর, উৎকণ্ঠা কর, উত্থাপন কর, ঊহ্য কর, কর কর, বিলাস কর, বিরক্তি কর, বিভ্রান্তি কর, বিক্রয় কর,বিস্ময় কর, প্রমোদ কর, সৌহার্দ কর প্রভৃতি আজও উল্লেখযোগ্য ।



(*** মহান ঐতিহাসিক বরেন্দ্রনাথ ধাড়ার মতে ভাস্কো দা গামা’র আসল নাম আরান্তিস দো নাসিমেন্টো টেনিসন । আরান্তিস টেনিসন পর্তুগালের ভাস্কো নামক এক মেছুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । ভাস্কো এক মহান কুস্তিগীর ছিলেন । কালিকট বন্দরে পদার্পনের ১১ বৎসর পূর্বে তিনি পঞ্জাব মুলুকে আসিয়া পঞ্জাবকেশরী গামা-র সহিত মল্লযুদ্ধ করেন । উভয়ের কেহই কাহাকেও পরাজিত না করিতে পারিলে, আরান্তিস টেনিসনের বীরত্বে অভিভূত গামা তাঁহাকে ভাস্কো গ্রামের গামা অর্থাৎ ভাস্কো দা গামা নামে অভিহিত করেন । প্রমাণ স্বরূপ ধাড়া মহাশয় পঞ্জাবের চালু বাক্যবন্ধ যথা – লয়েন দা পঞ্জাব, সর্সোঁ দা সাগ ও কোল্গেট দা জুবাব নহী-র উল্লেখ করেন ।)






--

আপত্তি কর

--

রাজা অকার্য করের জ্যেষ্ঠা কন্যা । সুলতানা রিজিয়া ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম মহিলা শাসক হিসাবে চিহ্নিত হইলেও ঐতিহাসিক বরেন্দ্রনাথ ধাড়ার মতে এ সম্মান মহারাণী আপত্তি কর-এরই প্রাপ্য। রাজা অকার্য করের জীবনকালে আপত্তি কর বিরোধী পক্ষের দলনেত্রী রূপে কাজ করিয়াছিলেন । রাজা অকার্য করের জীবনাবসানের পর আপত্তি কর বঙ্গদেশের একচ্ছত্র কর্ত্রী হইলেও তিনি আমরণ বিরোধী গোষ্ঠীর দলনেত্রী হইয়াই রাজ্য পালন করেন । বঙ্গদেশে “চলবে না চলবে না” স্লোগানটির জন্ম এই সময় হইতেই । রাণী আপত্তি কর বংশরক্ষার্থে মগধ দেশের বিখ্যাত উকিল ধাড়া বংশের শ্রী চুয়াল্লিশ ধাড়া কে পোষ্যপতি পদে নিয়োগ করেন। কথি্ত, রানী আপত্তি করের নিয়মিত “চলবে না চলবে না” শ্লোগানে শ্রমিক শ্রেণী খেপিয়া উঠিলে শ্রী চুয়াল্লিশ ধাড়া চুয়াল্লিশ দফার সংবিধান রচনা করেন – যাহা মূলত বিভিন্ন প্রকারের মুখকুলুপ প্রণালী । কৌটিল্য রচিত অর্থশাস্ত্রে এই চুয়াল্লিশ দফা সংবিধানের বিশেষ উল্লেখ পাওয়া যায় । এই সংবিধানের উপর প্রবল চটিয়া কলিকাতার উত্যক্ত জেলে পাড়ার বাসিন্দারা ইহার ক্যারিকেচার স্বরূপ সং যাত্রার আয়োজন করে – যাহা আজো রথের দিন কলিকাতার অন্যতম আকর্ষণ ।


--
ইকেবানা হাতি
--
কৃতি ফুলসজ্জাবিদ । বিখ্যাত জাপানি শৈলীর ফুলসজ্জার আবিষ্কারক । জাপান সম্রাট একাএকা মাতশুয়ো ৮২ বৎসর বয়েসে ৩৪ –তম দার পরিগ্রহণ করিলে সম্রাটের ফুলশয্যা কক্ষে ইকেবানা “পদ্মবনেপ্রমত্তবরাহ” স্টাইলে অভাবনীয় ফুলসজ্জা করেন । সম্রাট তাঁহার শিল্পকর্মে অভিভূত হইয়া তাঁহাকে জাপানী নাগরিকত্ব প্রদান করেন ও জাপান দেশে ইকেবানা কতৃক আবিষ্কৃত ফুলসজ্জার ব্যাপক ব্যবহারের নিমিত্তে ডিক্রি জারি করেন ।


--

ঈষৎ হাতি
--
ইকেবানা হাতির সুযোগ্য পতি । ইনি বনসাই বা বৌনাশিল্পের জনক । ঈষৎ হাতির পিতৃপ্রদত্ত নাম বিরাট হাতি । বিরাট হাতি, কম্বোজ দেশের বিখ্যাত রসায়নবিদ কম্বুগ্রীব মিস্ত্রী (পাশাত্যে, কে মিস্ত্রী বলিয়া বহুল পরিচিত)-র অধীনে ১২ বৎসর জৈবরসায়নের ওতপ্রোত জ্ঞান অর্জন করিয়া বামনকরণ ফর্মুলার আবিষ্কার করেন । উক্ত ফর্মুলার প্রথম পরীক্ষা নিজের উপর করিয়া সার্থক হইবার পর ব্যাঙ্কশাল কোর্টে এফিডেবিট করিয়া নিজ নাম ঈষৎ হাতি-তে পরিবর্তিত করেন । জাপান সম্রাট একাএকা মাতশুয়ো এই ফর্মুলা চীন যুদ্ধে ব্যাপক হারে ব্যবহার করিবার মনস্থ করিলে চীন সম্রাট ফেং শুই, জাপান দেশের নাগরিক দূর্দান্ত চীনা গুপ্তঘাতক লিন চিং –কে দুই মণ সুপারির বিনিময়ে উক্ত ফর্মুলা চুরি করিতে নিয়োগ করেন । লিন চিং রাত্রিকালে জাপান সম্রাটের শয়ন কক্ষ হইতে ফর্মুলার শিশি নিয়া পলায়ন করিতে গিয়া উঁচট খাইয়া পড়িলে তাঁহার হস্তধৃত শিশি হইতে কয়েক বিন্দু ফর্মুলা জাপান সম্রাটের অন্তুর্বাসে পতিত হয় । ইহার পর বিস্তারিত জানা না গেলেও – লিন চিং ও ঈষৎ হাতি উভয়েই রাজদ্রোহের অভিযোগে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত হইয়া হারাকিরি করিতে বাধ্য হন । পতি বিয়োগের পর ইকেবানা হাতির কী দশা হয় তাহা জানা যায় নাই ।


--
উত্তর দে
--
আই পি এস অফিসার এবং বিশিষ্ট সমাজসেবী । ইনি এবং এনার সুযোগ্যা পত্নী জিজ্ঞাসা কর বহু আন্দোলনের সহিত জড়িত । আজিকার ভারতবর্ষে “রাইট টু ইনফরমেশান বা RTI (তর্জমায় ; দক্ষিণ পন্থী হইলে তথ্য পাইবেন, বামপন্থী হইলে তথ্য হইবেন) অ্যাক্ট-এর প্রতিষ্ঠা এই দম্পতির অক্লান্ত আন্দোলনের ফল । এই দম্পতি তাঁহাদের প্রবল অশ্লীলতা-বিরোধী কার্যকলাপের মধ্য দিয়া সমাজে ছাপ রাখিয়াছেন । কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় “সরোজিনীর রাজহাঁস” নামক কবিতাটি লিখিলে উত্তর দে মরাল পুলিশের মাধ্যমে ভারতের সমস্ত সরোজিনী নামক মহিলার রাজহাঁস বাজেয়াপ্ত করেন । সরোজিনী নাইডু এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করিয়া একটি সুরেলা গদ্য লেখেন ও রাশিয়ান সমাজবিপ্লবী চাইকোহুইস্কি ইহাতে সুরারোপ করিয়া “Swan lake” নামক বিখ্যাত ব্যালে’র নির্মাণ করেন ( যদিও বিকল্প ঐতিহাসিক সত্যময় জানা-র মতে “Swan lake” আদতে, প্রখ্যাত জ্যাজ শিল্পী “টুয়েলফথ বোর”-রচিত Swine Leak –এর অপভ্রংশ মাত্র ) । উত্তর দে এবং জিজ্ঞাসা কর বর্তমানে “বদল” বলিয়া একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন । “বদল”-এর মুখ্য এজেন্ডা যে কোন অ্যাডাল্ট ও অ্যাডাল্টারেটেড জিনিশ হইতে সমাজের মুক্তি – যথা ভেজাল,অ্যাডাল্ট সিনেমা/ছবি/শিল্পকর্ম,বিদ্যাপতি, কালিদাস, চন্ডীদাস, মকবুল ফিদা হুসেইন, ধুম্রপান, মদ্যপান, ভোটাধিকার, বিবাহ ও যৌনসংসর্গ । যৌনসংসর্গ বিষয়ে তীব্র বিতৃষ্ণা বশতঃ উত্তর দে ও জিজ্ঞাসা কর কৃত্তিম নিষেকের মাধ্যমে একটি পূত্রসন্তান লাভ করেন যাঁহার নাম আয় কর দে । আয় কর দে, জন্ম হইতেই অবিশ্বাস্য ক্ষমতার অধিকারী হিসাবে পরিচিত হইয়াছেন । মাত্র ৩ বৎসর বয়সে তিনি কেবল করনিষ্পেষন মারফত ২০০ গ্রাম ওজনের গ্রানাইট প্রস্তরখন্ড হইতে আড়াই লিটার জল বাহির করিয়া গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তুলিয়াছেন ।


--
ঊরিব্বাবা সিংহ *

কৃতি শিকারী, যাঁহার উল্লেখ এন-এথ অ্যান্ডারসনের “বিচালিগ্রামের ভুতুড়ে সিংহ” গ্রন্থটিতে রহিয়াছে । বাল্যকালে গুজরাটস্থ গীর অভয়ারণ্যে ভ্রমণকালীন এক ভয়াবহ চতুর সিংহ-এর আক্রমণে বিপর্যস্ত হইয়া আন্ডারপ্যান্ট, গেঁজে ও গেঁজেস্থিত ২০০০ টাকা হারাইলে উরিব্বাবা সিংহ তস্য পিতা বাবাগো সিংহ-র হস্তে প্রভূত লাঞ্ছনার শিকার হইয়া প্রতিজ্ঞা করেন যে তিনি পৃথিবীর সিংহ-বংশ নির্মূল করিয়া তবেই ক্ষান্ত হইবেন । প্রতিশোধ চরিতার্থে ব্যাপক বুদ্ধিবলের প্রয়োজন বোধ করিয়া ঊরিব্বাবা সিংহ উজ্জয়িনী নগরের নিকটে দাস ক্যাপিট্যালের রাজা কালিদাস-এর সহিত শলা-পরামর্শ করেন বলিয়া জানা যায় । প্রখ্যাত বুদ্ধিবিদ কালিদাস তাঁহারে “চ্যারিটি বিগিন্স অ্যাট হোম” তত্ত্ব-টির প্রয়োগে পরামর্শ দিলে ঊরিব্বাবা সিংহ গুলি করিয়া নিজবংশ ধবংসপূর্বক আত্মঘাতী হন ।

{* কৃতজ্ঞতা, অমিতাভ প্রহরাজ (উক্ত নামটি বিনা অনুমতিতে গ্যাঁড়া করিলাম)}


--
এ ১
--
একাগ্র পাল
--
বিশ্বের প্রথম গবাদি পশুর প্রজননকারী ।

এ ২
--
একুশ চন্দ্র আইন
--

বিশিষ্ট সংবিধান রচয়িতা । ইনি সোমালিয়া, উগান্ডা ইত্যাদি দেশের সংবিধান রচয়িতা হিসাবে খ্যাতি লাভ করিয়াছিলেন ।
--


--
ঐকিক আইন
--
একুশ চন্দ্র আইনের কনিষ্ট ভ্রাতা । কৃতি অঙ্কবিদ ।


--
ওমর দরদিয়া
--
কৃতি মানসিক যন্ত্রণাবিদ । ১৯৭০-এর মুক্তির দশকে ইনি সুইডেন দেশে গিয়া অপহরণের ব্যবসায় খুলিয়াছিলেন । আশ্চর্যজনক ভাবে অপহৃত ব্যাক্তিসকল স্ত্রী পুরুষ নির্বিশেষে অপহরণকারী ওমর দরদিয়ার প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করিতে থাকেন – এই অদ্ভূত ব্যবহারকে মনোবিদেরা স্টকহোম সিন্ড্রোম নাম দেন । স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই আশ্চর্য ফেনোমেনান লইয়া গীতি রচনা করিয়াছেন ।



--
ঔদার্য বর্ধন
--
দ্বাপর যুগের লিপিতে ইহাঁর উল্লেখ শ্রীকৃষ্ণ গোপ-এর গৃহ শিক্ষক হিসাবে পাওয়া যায় । শ্রীকৃষ্ণ গোপ সন্দীপন পাঠশালা হইতে নামতাশাস্ত্রে গ্রাজুয়েট হইবার পর উচ্চশিক্ষার্থে জগতগুরু ঔদার্য বর্ধন-এর আশ্রমে ভর্তি হন । তথায় পাঠলাভ করিয়া তাঁহার চারিত্রিক ঔদার্য এমত হয় যে শ্রীকৃষ্ণ গোপ সমস্ত পরস্ত্রীরে নিজস্ত্রী জ্ঞানে ভজনা শুরু করেন ও অচিরেই মুগ্ধ জনগণ তাঁহারে ভজনা করিতে শুরু করে ।
ঐতিহাসিক বরেন্দ্রনাথ ধাড়ার মতে রুশ দেশে সাম্যবাদ নামক উদার সমাজপ্রথার উৎপত্তি আদতে
গুরু ঔদার্য বর্ধনের তত্ত্ব হইতেই হইয়াছিল । কিন্তু বর্বর রুশ জাতি এই দর্শণের সম্যক মূল্য না বুঝিয়া পরস্ত্রীকাতরতায় আক্রান্ত হয় ও বিষাদ্গ্রস্ত হইয়া দিকে দিকে মাল খাইয়া গ্লাস নষ্ট করা আরম্ভ করে – রুশ ভাষায় যা পেরেস্ত্রৈকা ও গ্লাসনস্ত বলিয়া সুবিদিত । উক্ত ডামাডোলে মূষলপর্ব রিপিট হইয়া রুশ দেশে প্রভূত অশান্তির মাধ্যমে রাজধানীবাদ বা ক্যাপিটালিজমের প্রতিষ্টা হয় ।




--
কে সি নাগ ওরফে কালাচাঁদ নাগ, নাগ বংশে জন্মগ্রহণ করেন, খ্রিষ্টপূর্ব ১৯৩৩ শে । পিতার নাম অর্জুন সেন, মাতা; উলুপী নাগ, বৈমাত্রেয় ভাই বভ্রুবাহন মণিপুরী । বভ্রুবাহন কালাচাঁদের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন । পিতা অর্জুন, "জাস্ট সিগ্রেট কিনে আসছি" বলিয়া মহাপ্রস্থানের পথে গমণ করিলে জ্যেষ্ঠ কালাচাঁদ কনিষ্ঠ বভ্রুবাহনেরে সন্তানরূপে কোলে মাথায় তুলিয়া মানুষ করেন । কথিত-- নাগের মাথার মণি প্রবাদটির উৎপত্তি এইখানে ।
কালাচাঁদ পাপারাৎজির জ্বালায় পিতৃপরিচয় উপেক্ষা করিয়া মাতৃপরিচয় গ্রহণ করেন । জন্ম হইতেই কালাচাঁদ অঙ্ক শাস্ত্রে প্রভূত প্রতিপত্তিশালী ছিলেন । কথিত,পাণিণী একদা মজলিশে অঙ্ক ভুল বলিলে কালাচাঁদ মাতৃজঠর হইতেই তাহাকে তিন খন্ড মেটিরিয়া মেডিকা ছুড়িয়া মারেন । ক্ষুব্ধ পাণিণী এই শারীরিক ও মানসিক অপমানের প্রতিবাদ করিয়া নিউ দিল্লী তিসহাজারি আদালতে একান্ন দফা মামলা দায়ের করেন । কিন্তু অভিযুক্ত কালাচাঁদ মাতৃজঠরে অবস্থিত থাকার দরুণ জজসায়েব হিজ হাইনেস বংশলোচন বটব্যালের নজরের অগোচরভূক্ত হইবার কারণে মোকদ্দমা কল্পিত বলিয়া পরিগণিত ও ডিসমিস হয় । ১৯৮৩ খ্রীঃ-এ পাণিণীর বংশধর শ্রী রাম রাও তাতিনেনি “অন্ধা কানুন” নামে এক চলচিত্র নির্মাণ করেন যা পাণিণী বনাম মাতৃগর্ভস্থ কালাচাঁদের আইনি লড়াইয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল ।
কালাচাঁদ,আইজ্যাক নিউটন ও তাঁহার অনুজ হাইজ্যাক নিউটনের গৃহশিক্ষকতা করিয়াছিলেন । তাঁহার অপর বিখ্যাত ছাত্রদের মধ্যে আরকিমিডিস, বাবু বঞ্জুল ব্যানারজী, সোক্রাত, দেকার্ত, ও নিধিরাম হালদার বিশেষভাবে উল্লেখ্য ।
সূত্র; হোকশাস্ত্র, পরিচ্ছেদ ৩৭, প্রিঃ ২৫৩।


--
খগেন্দ্রনাথ, পদবী বর্জিত । পিতা ও মাতার পরিচয় জানা নাই । খগেন্দ্রনাথ সম্পর্কে আলগা কিছু তথ্য ছাড়া – (যথা – সৃষ্টি নাম্নী এক বালিকার জন্মকালে খগেন্দ্রনাথ ও তাঁহার পোষা স্টেরয়েডপুষ্ট শতফণাবিশিষ্ট হুমদো হলহলে সর্প উভয়েই তিরিশ বোতল কোরেক্স পান করিয়া গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হন । ঘুমন্ত খগেন্দ্রনাথকে শবদেহভ্রমে তাঁহার নাভিস্থলে এক অতিকায় পদ্মফুল অঙ্কনপূর্বক অ্যান্ডরোমিডা নক্ষত্রপুঞ্জ হইতে আগত এক চতুর্মস্তকযুক্ত এলিয়েন বৃদ্ধ শবসাধনায় মগ্ন হন) বিশেষ কিছু, কিছুদিন আগেও জানা ছিল না । বর্তমানের উইকিলিক নামক তথ্যলিক বাবদ কয়েকটি চাঞ্চল্যজনক খবর জনসাধারণের গোচরে আসিয়াছে । যথা – খগেন্দ্রনাথ পেশাগত ভাবে এক সফল ইন্টিরিয়র এবং এক্সটিরিয়র ডেকোরেটার হইলেও, খ্রিষ্টপূর্ব ৫৪৩-এ শ্রী গোউটামা বুঢঢা (মাই ঘড ! সমেত) –র শিষ্যত্ব গ্রহণ করিয়া পূনর্জন্মে পারদর্শী হইয়া ওঠেন । এবং পরপর দশবার সুদূর পঞ্জাবমুলুকের হোঁশিয়ারপুর জিলায় অবতার সিংহ নামে জন্মগ্রহন করেন (পরিপূর্ণ স্মৃতিসমেত)। দশ দশবার পৃথিবীর (হোঁশিয়ারপুরের) বর্ধমান ক্রমাবনতি দেখিয়া ক্ষুব্ধ এবং যার পর নাই তিতিবিরক্ত খগেন্দ্রনাথ, শ্রীল শ্রীযুক্ত অ্যাডলফ হিটলারের পিউরিটান ধর্মে দিক্ষিত হইয়া শান্তিপূর্ণ উপায়ে পৃথিবীর মানুষকে এক শুদ্ধ জাতি ও এক শুদ্ধ জিনপুলে পরিনত করিবার অভিপ্রায়ে পৃথিবীর সর্বপ্রথম স্পার্মব্যাঙ্কের স্থাপনা করেন ও নিজ শুক্রানুর ব্যাপক বিতরণের ব্যবস্থা করেন । তাঁহার প্রথম খরিদ্দারদের মধ্যে পান্ডুজায়া কুন্তি ও মাদ্রী উল্লেখযোগ্য । আজ খগেন্দ্রনাথ বাপোঁ কা বাপ বলিয়া বাঙ্গালির হৃদয়ে পুনর্স্থাপিত ।


--
গদাই লস্কর । পিতা, ফাদার লস্কর । মাতা, মাদার লস্কর । জন্মস্থান লস্করপাড়া, ভুষিগ্রাম । থানা, বিন্তিপুর ।
গদাই লস্কর তাঁহার পিতা মাতার কনিষ্ঠ সন্তান । ফাদার ও মাদার লস্করের প্রথম সন্তান স্বনামখ্যাত শ্রী লোক লস্কর-এর পরিচিতি তাঁহার পরাক্রম ও শারীরিক শক্তির জন্য সুবিদিত (কথিত-- শ্রী লোক লস্কর একাকী ১৬জন সবল মানুষের সমান কার্যক্ষম ছিলেন। এবং আজিকার বাংলাভাষায় লোক লস্কর শব্দটির বহুবচনীয় ব্যবহার, জেষ্ঠ্য লস্কর ভ্রাতার অমিতবীর্য হইতেই উৎপত্তি লাভ করে )।

চরকসংহিতা অনুযায়ী গদাই, ওবিসিটি (মুটানি) রোগের বিশ্বের সর্বপ্রথম উদাহরণ । শ্রী লোক লস্করের পরাক্রমে ভীত সন্ত্রস্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, সি আই এ ও সর্বভারতীয় তস্কর সমিতি তাঁহাকে উপরিপর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দাবাইয়া রাখতে অকৃতকার্য হইলে উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় দ্রুতখাদ্যশিল্পী ম্যাকডোনাল্ড সায়েব-এর সহযোগে বিস্তর গবেষণার পর উক্ত কোম্পানিগণ ভুষিগ্রামে প্রথম বার্গার ও মিষ্ট ভুড়ভুড়ির (সোডার) বিপণী স্থাপিত করে । জেষ্ঠ্য ভ্রাতার নিষেধ সত্ত্বেও গদাই উক্ত বিপণীর মনোহর ও অতীব মেটাবলিক আলস্য প্রদায়ক খাদ্যবস্তুর মোহে পড়িয়া অকালে ভয়ংকর ওবিসিটি গ্রস্ত হন । তাঁহার থপ থপ কাফ্রী হস্তিনীর ন্যায় নিরলস পদচারণায় ও আইন্সটাইন বর্ণিত আপেক্ষিকতাবাদ দরুন ব্যাপক ভরজনিত সময় ও পরিসরের বিকৃতির কারণে চাষী জমিতে ফাটল ধরে, ও ভুষিগ্রামস্থিত এক গুপ্ত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ উন্মুক্ত হইয়া ভুষিগ্রামকে লাভাস্রোতে বিলীন করিয়া দেয় । উক্ত আগ্নেয়গিরির নাম ভুষিভিয়াস, যাহা বর্তমানে ইতালি দেশের নাপোলি জনপদের নিকট বর্তমান । ভুষিভিয়াস ইতালিতে কি করিয়া পৌছায় তাহা নিয়া পন্ডিত সমাজ দ্বিধাবিভক্ত । বিখ্যাত আফগান ভূতাত্ত্বিক জেরুজালিম খাঁ-র মতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে এক কন্টিনেন্টাল ড্রিফট-এর সুবাদে ভুষিভিয়াস আগ্নেয়গিরিটি ছিটকাইয়া গিয়া ইয়োরোপে পতিত হয় । অপরপক্ষে ইতালীয় ভূতাত্ত্বিক জিয়োভাগ্নি আলোকবর্তিকার মতে ইতালির অধিকর্তা বেনিটো মুসোলিনি খোদ ভারত সফরে আসিয়া, আগ্নেয়গিরিটি তাঁহার স্ত্রীর কাঁচুলির ভিতর ভরিয়া আবগারি দপ্তরের নজর এড়াইয়া আকাশপথে ইতালি পাচার করেন । আগ্নেয়গিরির উত্তাপে মুসোলিনি বা তাঁহার স্ত্রী যে বিন্দুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত হন নাই তাহার কারণ হিসাবে জিয়োভাগ্নি, মুসোলিনি দম্পতির পোক্ত ডিপ্লোম্যাটিক ইমিউনিটির উল্লেখ করেন ।

সূত্রঃ ভুষিভিয়াস এন আন্দান্তে এলিজি রোমা নাপোলি মারাদোনা অ্যান্ডা কারাবিনিয়েরি – বাই জিয়োভাগ্নি আলোকবর্তিকা ।


--
ঘড়িয়াল দাস ওরফে গ্যাভিয়ালিস গ্যাঞ্জেটিকাস । পূরাণে বর্ণিত প্রথম বাঙালি যিনি খোদ পোপ বেনেডিক্ট ১ ও অ্যান্থনি ফিরিঙ্গির পাল্লায় পড়িয়া রোমান ক্যাথলিক ধর্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন এবং নিজ নাম পাল্টাইয়া শুদ্ধ লাতিন নাম রাখিয়াছিলেন । ঘড়িয়াল, বঙ্গদেশে প্রস্তুত সুইস ঘড়ির জনক বলিয়া পরিচিত । যদিও বিশিষ্ট ঐতিহাসিক “অতীতেন্দ্র হাঁসদা”-র মতে তিনি সুইস ঘড়ির এক দালাল ব্যতীত আর কিছু নহেন । অতীতেন্দ্র বাবুর মতে সুইস ঘড়ির আসল নির্মাতা সুন্দরবনের নিকটে ওয়াচগঞ্জ জনপদের টাল্লু জনগোষ্টী । ঘড়িয়াল, শায়েস্তা খাঁ-র হুকুমে তাঁহার পরিবারবর্গের নিমিত্তে ১৩৫০টি সুইস ঘড়ি নির্মাণ করাইয়াছিলেন । দিল্লীর জনপদে সেই ঘড়িগুলি আমির ওমরাওদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিলে তাঁহারা নিজদিগের নিমিত্তে ঘড়ি নির্মাণের জন্য হুলুস্থুল শুরু করিলে শায়েস্তা খাঁর কনিষ্ঠা বিবি শাস্তি খাঁ ঈর্ষার বশে ঘড়িয়াল দাসকে পঞ্চাশ ধামা স্বর্ণ বাতাসা মজুরী দিয়া ঘড়ি শিল্পের ত্বরিত নাশের বন্দোবস্ত করেন । তাঁহার আদেশে ঘড়িয়াল দাস সর্বভারতীয় তস্কর সমিতির মাধ্যমে টাল্লু জনগোষ্টীর মধ্যে সেই স্বর্ণ বাতাসার বিতরণ করিলে অচিরেই ঘড়ি প্রস্তুতকারীদের অঙ্গুলি ফুলিয়া কদলীবৃক্ষে রূপান্তরিত হয় এবং সুক্ষ ঘড়ি নির্মাণ শিল্প ধবংসপ্রাপ্ত হয় । এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে টাল্লু জনগোষ্ঠী মহাকরণের সম্মুখে এক ব্যাপক শোক ও ক্ষোভ ধর্নাসভার আয়োজন করে । নিজ করতুত গোপন করিতে ঘড়িয়াল উক্ত ধর্নায় অংশগ্রহণপূর্বক চুল্লু সেবন করিয়া প্রভূত অশ্রুবিসর্জন করেন । কুম্ভীরাশ্রু প্রবচনটির জন্ম এই ঘটনা হইতে উদ্ভূত ।


--
ঙটাও ঙরাও। সুকৃতি বাঙালি । জন্ম ইন্দোনেশিয়ার বোর্ণিয়ো । তিন বছর বয়েসে কুসঙ্গে পড়িয়া ডঃ মর‍্যু-র দ্বীপে গিয়া হাজির হন । ডঃ মর‍্যুর জেনেটিক কাঁচির প্রকোপে তিনি অবিলম্বে কমলাবরণ ধারণ করেন । ৩২ বছর বয়েসে ঙটাও তাঁহার ২৯ বছরের গভীর সাধনখোদনের ফল থেমস নদীর সুড়ংগ দিয়া পলায়ন করিয়া ব্রিটানি দ্বীপের ভুঁইফোঁড়ন করিয়া ওঠেন । উইলিয়াম ডিরোজিও সায়েব তাঁহার কাহিনী শুনিয়া দয়া পূর্বক পত্রপাঠ (পত্রটি কাহার সে বিষয়ে বিশদ জানা যায় নাই) তাঁহাকে বোর্ণিয়ো দ্বীপে জাহাজ মারফত পাঠাইবার বন্দোবস্ত করেন । বারমুডা ত্রিকোনের প্রকোপে জাহাজডুবি হইলে, অসহায়, ভাসমান ঙটাও তাঁহার উজ্জ্বল ও দ্যুতিময় কমলা গাত্রবরণের কারণে ট্রয় হইতে প্রত্যাগত বীর ওদিসিউস-এর নেত্রগোচর হইলে ওডিসিউস তাঁহার জীবনরক্ষা করেন । মহাভূজ ও পরাক্রমশালী ঙটাও প্রাণরক্ষার বিনিময়ে ওদিসিউস-এর হৃত রাজ্য ও রাণীর উদ্ধারে প্রভূত সহায়তা করেন । রাজা ওডিসিউস কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তাঁহাকে এক কাষ্ঠ নির্মিত অশ্ব প্রদান করেন যাহা জলে স্থলে গগনে বিচরনে সক্ষম । উক্ত ঘোড়া চড়িয়া ঙটাও তাঁহার পিতৃ পুরুষের দেশ ভারতে পদার্পণ করেন । আরব্য রজনী গ্রন্থে লিপিত রইয়াছে যে ভারতে আসার পথে তিনি বোগদাদ, দামাস্কাস ও চুলবুলিস্থানে বিভিন্ন কৃতিত্বের নিদর্শন রাখেন । অভাগা ভারত দেশের আমলা, মন্ত্রী ও পন্ডিতেরা টেলিকম কেলেঙ্কারি ও তৎসম্বন্ধিত যোগাযোগ ব্যবস্থার গন্ডগোলে বীর ঙটাও সম্পর্কে সম্যক অবহিত না থাকিবার কারণে ঙটাও প্রভূত অপমানের শিকার হন । এমন কী স্বাস্থ্য বিভাগ তাঁহার ঘোর দ্যুতিময় কমলা গাত্রবর্ণের কারণে তাঁহাকে দূরারোগ্য বোগদাদী ন্যাবায় আক্রান্ত মনে করিয়া আইসোলেশান ওয়ার্ডে রাখিবার বন্দোবস্ত করেন । অবশেষে জাতিপুঞ্জের তৎকালীন নেতা শ্রী বুত্রোস বুত্রোস ঘালি ও ইন্টারন্যাশিওনাল অ্যান্টি অ্যাপারথায়েড ফ্যাসিস্ট কমিটির হস্তক্ষেপে ভারত সরকার তাঁহাকে সান্মানিক নাগরিকত্ব ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে একটি গ্রাম প্রদান করেন । ঙটাও নিজ গ্রামের নাম কমলাফুলি রাখিয়া তাহাতে পৃথিবীর প্রথম টিয়াপাখি প্রজনন ও সংরক্ষন কেন্দ্র স্থাপনা করেন ।

--
চপলচিত্ত চ্যাটার্জী । প্রথম বাঙালি সাইকায়াট্রিস্ট । চপলচিত্তর পিতা স্থিরচিত্ত চ্যাটার্জী নদীয়া জিলাস্থিত ফুলিয়া গ্রামে আটাকলের ব্যবসায় করিয়া ফাঁপিয়া ওঠেন । তাঁহার অঙ্গুলি ও উদরস্ফিতীর সঙ্গে সঙ্গে প্রভূত চিত্তস্ফিতী ঘটিলে অস্তিরচিত্ত হইয়া তিনি মরমর হইলে, তাঁহার ফুলিয়া গ্রামোস্থিত মনোহারিনী দেবী মেমোরিয়াল বিদ্যালয়ের, ক্লাস এইট পাশ পূত্র চপলচিত্ত পিতার রোগ প্রশমনের উপায় খুঁজিতে স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় যান । তথায় মনোপযুক্ত চিকিৎসকের সন্ধানলাভে বিফল চপলচিত্ত নিজেই চিকিৎসা বিদ্যা অর্জন করেন ও স্বদেশে প্রত্যাবর্তনপূর্বক পিতাকে ফের স্থিরচিত্ত করিয়া তোলেন । স্কটদেশে বিরাজকালীন চপলচিত্ত ব্যাগপাইপ নামক বাদ্যযন্ত্রটি নিষিদ্ধ করিয়া লকনেস মনস্টার নামক অতীব ভীতিপ্রদায়ক প্রাগৈতিহাসিক প্লিসিওসোরাস গোতৃভূক্ত প্রাণীটিকে সুস্থ করিয়া তোলেন । লকনেস মনস্টার বর্তমানে শ্যামদেশের পাটাগং মনাস্টারিতে নিরামিষ ভোজন করিয়া লামা হইবার প্রচেষ্টা করিতেছেন। কিছুদিন পূর্বে এক থুতু-নিক্ষেপ প্রতিযোগিতায় দক্ষিন আমেরিকার লামাদের পরাজিত করিয়া শীর্ষস্থান দখল করিলে শ্রী তান্সেন লামা তাহাঁকে ভবিষ্যতের তারকা বলিয়া উল্লেখ করেন ।


--
ছত্রধর মাহাতো । বাঙ্গালা মুলুকে জন্মগ্রহন করিলেও ছত্রধরের কর্মস্থান মারাঠা দেশ । ছত্রধর যৌবনে মহাভারতে বর্ণিত রাজা শিশুপালের পিতৃব্য কেসিপাল মহাশয়ের ছত্রনির্মাণ ফ্যাক্টরির দক্ষ কারিগর ছিলেন । বর্গী ভাস্কর পন্ডিত তাঁহাকে অপহরণ করিয়া মারাঠা দেশে নিয়া গেলে ছত্রধর প্রথমে ঈষৎ গাঁই গুঁই করিলেও অদূর ভবিষ্যতে ছত্রপতি শিবাজীর জীবন ও সংগ্রাম দ্বারা অভিভূত হইয়া তাঁহার নিমিত্তে অতীব সুচারু মসলিন ছত্র নির্মাণ করিয়া ও তাঁহার মস্তকে ছত্রধারণ করিয়া খ্যাতিলাভ করেন । ঐতিহাসিক অতীতেন্দ্র হাঁসদার মতে তাহাঁর ছত্রধর নামটি এই সূত্রেই পাওয়া । পলাশীর যুদ্ধে ছত্রধর তাহাঁর ছাতা লইয়া লর্ড ক্লাইভকে ডুয়েলে চ্যালেঞ্জ জানান । দুর্ভাগ্যবশত এই ডুয়েল চলাকালীন তিনি উঁচট খাইয়া নিজ ছত্রবিদ্ধ হইয়া বীরগতি প্রাপ্ত হন । নবীন চন্দ্র সেন মহাশয় রচিত “পলাশীর যুদ্ধ” নামক কবিতায় ছত্রধর মাহাতোকে, ছত্রধর্ম্মাহত বলিয়া অভিহিত করা হইয়াছে ।


--
জামালগোটা খান । সুশ্রুতের কৃতী ছাত্র । ইনি হিউয়েন সাং-এর সহিত চীনের ইউনান প্রদেশে গিয়া ইউনানি চিকিৎসার প্রবর্তন করেন । জামালগোটা খান, তাঁহার সুযোগ্যা পত্নী সোনাপাতা খান ও সতীর্থ গবেষক গুলবুদ্দিন ইশব এই তিন চিকিৎসকের নিদানে বঙ্গমাতার কোষ্ঠকাঠিন্য রোগমুক্তি হইয়া বহু কৃতি বাঙ্গালির নির্গমনের পথ প্রশস্ত হয় । কলিকাতার ধাপা অঞ্চলের কৃপায় আজো যে দীন দুঃখী শিক্ষিত বাঙালি শীতকালে ৪ টাকায় একটি ফুলকপির বাচ্চা কিনিতে পারে তাহার অন্যতম শ্রেয় এই চিকিৎসকত্রয়ীর প্রাপ্য ।


--
ঝরাপাতা পাল । কৃতি রাজনিতীবিদ। ঝরাপাতার ন্যায় এনার ম্যানিফেস্টো যত্রতত্র উড়িয়া পড়িতে থাকিলে ও ডানবাম সর্বনীতির মানুষের উঠান দখল করিলে গোটা বাঙ্গালার মানুষ মিলিয়া তাহাকে নিরস্ত করিবার অভিপ্রায়ে “ঝরাপাতা গো আমি তোমারি দলে “ ঝরাপাতা গো যেও না ঝরে” ইত্যাদী সঙ্গীত রচনা করেন । ফল কী হইয়াছিল সে বিষয়ে ইতিহাস অবগত নহে ।


--
ঞআর্থক নঞ । জন্ম ভিয়েন্তিয়েন । বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী যিনি নাসিকাসঙ্গীতকে শিল্পের পর্যায়ে তুলিয়া আনেন ।তাঁহার শিষ্যদের মধ্যে শচীনদেব, কুন্দনলাল সহগল, মুকেশ ও হিমেশ রেশমিয়া প্রভূত খ্যাতি লাভ করেন ।


--
টোটাল চন্দ্র কোটাল । জন্ম বঙ্গদেশে হইলেও ইনি বিভিন্ন দেশে তাঁহার কর্মের নিদর্শন রাখিয়া গেছেন । বিখ্যাত ওলন্দাজ ফুটবলার ও কোচ যোহান ক্রুয়েফ টোটাল চন্দ্রের ফুটবল খেলা দেখিয়া তাঁহাকে বাতাবীনেবু ন্যাশানাল ইলেভেন দল হইতে হল্যান্ড দেশে নিয়া গিয়া সেইখানে এক অদ্ভূত কার্যকরী ফুটবল শৈলীর প্রচলন করেন যাহা আজিকার পৃথিবীতে “টোটাল ফুটবল” নামে সর্বজনবিদিত ।

--
ঠাকুরমাতা সহায় ও ঠাকুরদাদা সহায় । এই সহায় দম্পতি ভয়ংকর ছেলেধরা বলিয়া কুখ্যাত ছিলেন । যেই ঝুলির মাধ্যমে তাঁহারা সমগ্র বঙ্গদেশে তাঁহাদের অপহরণের জাল বিছাইয়াছিলেন তাহা আজো কলিকাতা জাদুঘরে নীল তিমির বেলীনের পার্শে সংরক্ষিত রহিয়াছে । শ্রী দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার মহাশয় এই সহায় দম্পতির যাবতীয় অপকর্মের দলিল তাঁহার ঠাকুরমার ঝুলি ও ঠাকুরদার ঝুলি গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করিয়াছেন । সহায় দম্পতির অপহরনগুলির মধ্যে লালকমল-নীলকমল, ব্যঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী, বুদ্ধু-ভুতুম, রাক্কস-খোক্কস, দৈত্য –দানা ও লীলাবতী-ইলাবতী এই সমস্ত জোড়া অপহরণ বিশেষ রূপে উল্লেখ্য । কথিত সহায় দম্পতি ইয়োরোপ ভ্রমণে গিয়া গ্রীম ভাইদের অপহরণ করেন ও তাহাদিগকে বিনা পারিশ্রমিকে বাংলায় শিশু সাহিত্য লিখিতে বাধ্য করেন ।


--
ডাকবাবু অধিকারী । বিশিষ্ট হরবোলা । ইনি জিরাফের ডাকে পারদর্শী ছিলেন ।


--
ঢোলগোবিন্দ দাম । প্রখ্যাত সাংবাদিক । সংবাদপত্র আবিষ্কারের পূর্বে ইনিই ঢোল বাজাইয়া সংবাদ বিতরন করিতেন । কথিত ইঁহার পূর্বপুরুষ আফ্রিকা মহাদেশ হইতে আসিয়াছিলেন ।




--
ণগেণ শেণ । বিরল (দন্ত) বাঙালি । এক জেনেটিক গ্যাঁড়াকলের শিকার শ্রী ণগেণ শেণের জন্মাবধি দন্তোতপাদ না হওয়ায় হতাশ ণগেণ দন্ত্য বর্ণ পরিত্যাগ করেন । ইনিই প্রথম বঙ্গভাষায় মুর্ধণ্য “ত” উরুশ্চারণ করিয়া খ্যাতি লাভ করেন ।


ত ১
--
তথাগত পাঁড়ুই । ইনি কোথাগত তাহা নিয়া বিশেষ জানা যায় না । তবে যে কোন অকুস্থলে (তথায়) তাঁহার আগমন রেকর্ড সময়ে ঘটিত । উনবিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ট গোয়েন্দা বলিয়া তথাগত নাম করিয়াছিলেন । ইনি কেবল মাত্র মুথাঘাসের উপর বিচালি, ইদুঁরবিষ্ঠা দেখিয়া ও দয়েলের ডাক শুনিয়া রঘু ডাকাতের গুপ্ত আড্ডার সন্ধান করিয়া তাঁহারে বন্দী করেন । বাস্কারভিলার কুইত্তা কেসে ইনি শার্লক হোমসকে টেক্কা দিয়া সেই কুইত্তাকে ধরিয়া তাহার পেটের ভিতর হইতে সমস্ত গোপন তথ্য বাহির করেন ও তাঁহাকে রাজসাক্ষী বানান । সেই ঐতিহাসিক মামলায় বাস্কারভিলার কুইত্তার বয়ানে এক ভয়ংকর ষড়যন্ত্রে ব্রিটিশ সরকারের কেষ্টু বিষ্টু, মাতাহারি, হাইন্রিখ ডিমলার, ডেভিড বেকহ্যাম, লেডি গাগা, জন ম্যাকেনরো ও স্যার বলাই মল্লিকের জোগসাজস প্রমাণিত হয় । ব্রিটিশ কোনান ডয়েল সায়েব উদ্দেশ্যমূলক ভাবে উক্ত ঘটনার বিবরণাবলী হইতে তথাগত পাঁড়ুইকে সরাইয়া শার্লক হোমসকে জয়যুক্ত করেন ।

ত ২
--
তিমির বিদারী দাম
--
কৃতি পেটো শিল্পী
--

--
থরহরি দাস । প্রথম বাংলা নির্বাক চলচিত্রের নির্দেশক । ক্রন্দনের অব্যবহিত আগে সুচিত্রা সেন, মধুবালা, মালা সিনহা ও গীতা দত্তের ঠোঁটের ডান পাশ ঈষৎ উচ্চে উঠিয়া যে ভাবে কাঁপিয়া উঠিত – কথিত সেই প্রকাশভঙ্গিমা শ্রী থরহরি দাসের সৃষ্টি ।



--
দিগন্তব্যাপী পোঁদ । পঞ্চাশের বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক বলিয়া পরিচিত । সত্তর হইতে নব্বই দশক অবধি চুড়ান্ত জনপ্রিয় হইলেও আজ কেবল মাত্র ভূত ঝাড়িবার নিমিত্তে বিক্রীত সরিষার বিজ্ঞাপনেই
তিনি ও তাঁহার শিল্পকর্ম সীমাবদ্ধ । তিরিশের দশকের কবিকুল বাংলা সাহিত্যে ইউরোপীয় আধুনিক বিচারধারা ও স্টাইলের আমদানি করেন ও বঙ্গসাহিত্যের মৌলিকতা বিসর্জনের অপরাধে পরবর্তীতে প্রচুর ধিক্কার লাভ করেন । দিগন্তবাবু ও তাঁহার সহকারী শিল্পীরা বঙ্গসাহিত্যে এই প্রভূত ক্ষতিকর ইউরোপীয় প্রভাব দূর করিতে আমেরিকান বীট কবিদের শরণাপন্ন হন । তাঁহাদের প্রভাবে তৎকালীন বাঙালি কবির স্টেপল খাদ্য-- স্টেপলার, গাজর, গাঁজা, সন্দেশ, গঁদ ও ভুষি হইতে কেবল মাত্র “বীটে” পরিবর্তিত হয় । দিনের পর দিন বীট খাইয়া এই কবিকূল রক্তবর্ণ ধারণ করেন ও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সুপ্রসিদ্ধ দাড়ি দিয়া পাপোষ নির্মাণ শিল্পের পত্তন করিয়া প্রভূত অর্থলাভ করেন । পরম প্রতিপত্তিশালী এই কবিরা রাত্রির কলিকাতার একছত্র শাষনভার গ্রহন করেন । বস্তুত গ্রীক দার্শনিক প্লেটো, হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের কবিশক্তিতে ভয়ভীত হইয়া তাঁহার রিপাবলিক হইতে সমগ্র কবিকে নির্বাসন দিবার পর এই প্রথম কোন কবিকুল দেশের শাসনভার নিজহস্তে তুলিয়া নিতে সক্ষম হন । কলিকাতার রাস্তার উড়ে কনস্টেবল, উচ্চ পুলিশ অধিকারী হইতে দুর্দান্ত আমলা সবাই এই কবিদের শাষনে চমৎকৃত হইয়া কবিতার অনুরাগী হইয়া ওঠেন । কবিতার এই জনপ্রিয়তা পৃথিবী ইহার আগে কদাপি দেখে নাই । ভারতবর্ষে চিনি কেলেঙ্কারী ঘটনার পর বী্ট দুষ্প্রাপ্য হইলে টেকনোবীটের আমদানি হয়, যাহা বীটের ন্যায় পুষ্টি কারক ছিল না । পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে এই কবিদের প্রতিপত্তি কমিয়া গিয়া আজ সরিষা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ।


--
ধর্মরাজ রায় । বিখ্যাত বিচারপতি । ইনি একমাত্র বাঙালি বিচারপতি যিনি সরকারী ভাতা গ্রহণ না করিয়া নিজ মহিষ শকটে আদালতে যাতায়াত করিয়া থাকেন ।


--
নির্মল কর ও তস্য ভ্রাতা মঙ্গল কর বঙ্গদেশে তাঁহাদের পরম জনহিতৈষী কার্যকলাপের জন্য বিখ্যাত । কুন্তলীন খ্যাত কেমিস্ট হেমেন বোস মহাশয়ের সাথে কোলাবোরেট করিয়া উক্ত ভ্রাতৃদ্বয় এক সুগন্ধী গামছার আবিষ্কার করেন যাহা মর্মের মলিনতা মুছাইয়া তাহাকে নবজীবন প্রদানে সক্ষম । উক্ত ভ্রাতৃদ্বয়ের এই আবিষ্কার ব্যবহারপূর্বক প্রভূত উপকার পাইয়া শ্রী রজনীকান্ত সেন এই ভ্রাতাদের স্মরণে তাঁহার অমর গীতি “তুমি নির্মল কর মঙ্গল কর মলিন মর্ম মুছায়ে” –র রচনা করেন ।

প ১
--
পটলবাবু পোদ্দার । একনিষ্ট নারীবাদী বলিয়া পরিচিত প্রিয়াংশু পোদ্দার কেন এফিডেভিট করিয়া নিজনাম পটলবাবু পোদ্দার-এ পরিবর্তিত করিয়াছিলেন সে সম্পর্কে বহুমত থাকিলেও সর্বাপেক্ষা বলিষ্ঠ মতানুযায়ী পটলবাবু তাঁহার আদ্যন্ত ভিক্টোরিয়ান ও গোঁড়া অশ্লীলতাবিরোধী আদর্শ চরিতার্থ করিতে এই চুড়ান্ত আত্মত্যাগ করেন । প্রখ্যাত ঐতিহাসিক বরেন্দ্রনাথ ধাড়া’র মতে – মহারাণী ভিক্টোরিয়া ও তাঁহার অনুগামীগণ বিশ্বাস করিতেন ফল ও সব্জি ব্যতীত অন্য কাহারো অন্ডকোষের প্রয়োজন নাই । আঙ্গুর, আপেল, পটল, এমন কী কলার বিচি নির্দোষ হইলেও মানবসহ অন্যান্য ইতর পুরুষ প্রাণীর বিচি সর্বতো প্রকারে অশ্লীল ও দেয়ারফোর পরিত্যাজ্য । পটলবাবু ১৮৪৪ খ্রীস্টাব্দে সর্বভারতীয় খাসীকরণ সভার প্রেসিডেন্ট মনোনীত হন ও গণখাসীকরণ চালু করেন । পারস্য, বোগদাদ, ও সিরিয়ার সুলতানকূল, মুঘল ও নবাবী হারেমে তাঁহার প্রতিপত্তির কথা লিপিত রইয়াছে । নিজ বিচি পরিত্যাগহেতু পটলবাবু এক অতীব দুঃসাধ্য সাধনা পথ অবলম্বন করেন । জানা যায় বিচি বর্জনহেতু পটলবাবু উক্তাংগে বিলাত হইতে আমদানি করা একস্ট্রা টাইট রাবার ব্যান্ড বাঁধিয়া লুঙ্গি উত্থাপন করিয়া নেবুতলা উইমেন্স কলেজের প্রাচীরে বসিয়া থাকিতেন । একাদশ বৎসরের দীর্ঘ সাধনার পর পটলবাবুর বিচি খসিয়া পড়িলে তৎকালীন ইংরাজ ভাইসরয় “দাউশ্যালনটকমিটঅ্যাডাল্টারি থমসন” সায়েবের মারফত এই সংবাদ বিলাতে পৌঁছায় । বিলাতি সংবাদপত্র “টাইমস” ফলাও করিয়া এই খবর ছাপে । তাঁহারা পটলবাবুর অন্ডকোষদুটির নামকরণ করেন হাম্পটি ডাম্পটি । আজ বহুযুগ পর “হাম্পটি ডাম্পটি স্যাট অন আ ওয়াল” ছড়াটি বহুলপ্রচলিত রহিলেও ছড়াটির উৎস বিস্মৃতির গর্ভে বিলীন ।

প ২
--
পান্থমহিম সিকদার । মূকাভিনয়ের জনক । ইনি জন্মাবধি মূক ও বধির ছিলেন । ভাগ্যানুসন্ধানে পান্থমহিম জাহাজী খালাসীর চাকুরি লইয়া গ্রীস দেশে পদার্পন করেন । তৎকালীন গ্রীসদেশে দৈনিক মজুরের ঘোরতর অভাব ছিল । পান্থমহিম বাতায়ন পরিষ্কারের কাজে বিশেষ প্রসিদ্ধি লাভ করেন । গ্রীক অভিবাসন দপ্তর একবার বিদেশী হটাইবার পরিকল্পনা করিয়া এক অভিযান চালাইলে ভীত সন্ত্রস্ত পান্থমহিম পার্থেনন সংলগ্ন পানদোকান হইতে এক খাবলা চুন মুখে মাখিয়া ও দুইখিলি গুন্ডিপানে ঠোঁট রাঙ্গাইয়া গোরা সাজিয়া পলায়ন করেন । তাহার পর হইতে তিনি চুন ও পান না খসাইয়াই আজীবন ব্যতীত করেন ।
তৎকালীন গ্রীক সম্রাট ঘটকর্পর হেলিওদোরাস এক চন্দ্রযান প্রস্তুত করেন । পান্থমহিম সেই চন্দ্রযানের সাফাই কর্মচারী নিযুক্ত হন । চন্দ্রযান উৎক্ষেপণ কালে বধির পান্থমহিম সাবধানবার্তা জানিতে না পারায় চন্দ্রে পৌঁছান ও চন্দ্রভূমির উপর তাঁহার অতীব সাবধান চলাচল-ই আজ “মুন ওয়াক” বলিয়া প্রসিদ্ধ । গ্রীক কবি লুকান ও বিখ্যাত গ্রীক বক্তা এলিয়াস অ্যারিস্টাইদেস তাঁহাদের বর্ণনায় পান্থমহিমকে অমর করিয়াছেন । বলাই বাহুল্য “প্যান্টোমাইম” শব্দটি পান্থমহিমের অপভ্রংশ মাত্র । যদিও বাঙ্গালির খ্যাতির প্রতি ঘোরতর অসূয়া পোষনকারী ইংরাজ পন্ডিতদের মতে প্যান্টোমাইম শব্দটি “নির্বাক পাতলুন” হইতে উদ্ভূত ।


--
ফোড়েন্দ্র নাথ দালাল । রেসের মাঠ হইতে সিনেমা হল, সাট্টার ঠেক হইতে রিয়েল এস্টেট, সব্জি বাজার হইতে ট্রেনের টিকেট ঘর, নির্বাচনের আসন হইতে রাজগদ্দি – ফোড়েন্দ্র নাথ সর্বত্র বিরাজমান মুস্কিল আসান বলিয়া পরিচিত । শোনা যায় লর্ড ক্লাইভের পলাশীর যুদ্ধ জয়ের পিছনেও ইহার ভূমিকা অসীম ।



--
ব্যক্তিগতলিখনভঙ্গিমা বসু । উক্ত অবলারে কবি উৎপল কুমার বসু বাদাম পাহাড়ে হারাইয়া ফেলিয়া তাহাকে বিখ্যাত করিয়া তোলেন । পুরো সত্তরের দশকেই দৈনিক উৎকণ্ঠা স্তম্ভে (এগনি কলামে) বিজ্ঞাপন পড়িত – লিখনভঙ্গিমা তুমি যেখানেই থাক ফিরে এস – ইতি-- । বলাই বাহুল্য পুরো সত্তরের দশক তিনি ফেরেন নাই । পোস্টমডার্ন বিপর্যয়ের পর তাঁহার ফেরার কথা মাঝে মাঝে কানে আসে ।


--
ভারত সরকার । ভারত সরকার ও তাঁহার কনিষ্ট ভ্রাতা রাজ্য সরকার যে অতি গুরুত্বপূর্ণ বাঙালি এই কথা প্রচলিত রহিলেও এই ভ্রাতাদ্বয় আজো রহস্যের অন্তরালে । ইহাঁদের অস্তিত্ব নিয়াও পন্ডিতজনের মধ্যে প্রভূত সন্দেহ রহিয়াছে ।


--
মামামা বন্দোপাধ্যায় । মা’র চাইতে মামা বড় হয় কিন্তু মামা অপেক্ষা বৃহৎ নরহরি মামামা । মামামা এক প্রবল ঝঞ্ঝাপূর্ণ ব্যক্তিত্ব-- যিনি একাধারে পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ অপরাধারে সঙ্গীত ও চিত্র শিল্পী এবং যার পর নাই কবি । শ্রদ্ধেয় ঈশ্বর গুপ্ত মহাশয় মামামার জনসভার প্রত্যক্ষ দর্শণ করিয়া অভিভূত হইয়া এক সঙ্গীত রচনা করেন –
গঞ্জিকাসুধা করিয়াছি পান শুনিয়াছি নিজ কর্ণে
মামামা ধরেন রবীন্দ্রগীতি কান ঢাকি ভাঙা বর্মে
বাপরে কী গান জান আনচান শুনিয়া কিডনি ব্যাঁকা
মামামা চেঁচান “একলা চলো” পাব্লিক চলে একা




--
যদু মাস্টার বঙ্গের সর্বাপেক্ষা রহস্যাবৃত চরিত্র । ইনি বিদ্যালয়ের মাস্টার বলিয়া জ্ঞাত হইলেও সে নিয়া ভিন্নমত আছে । কোন কোন পন্ডিতের মতে ইনি পোস্ট মাস্টার হইলেও রেল স্টেশানের সহিত ইহার ওতপ্রোত সম্মন্ধ হইতে প্রতীত হয় যে ইনি স্টেশান মাস্টার হইলেও হইতে পারেন আবার স্টেশনাস্থিত গাঁটকাটাদের মাস্টরও হইতে পারেন । যদ্যপি স্টেশানমাস্টারের ট্রেন ধরিতে তড়িঘড়ির কথা ভাবিলে আশ্চর্য লাগে । তদুপরি তাঁহার এই চিরকালীন শ্বশুর বাড়ি গমণের ঘটমান বর্তমানের কথা ভাবিলেও বিভিন্ন প্রশ্নের উদ্রেক হইয়া থাকে যথা – যদু কী একদারগ্রস্ত ? না-কী বহুদারগ্রস্ত কুলীন ? কিন্তু তাঁহার পদবীর উল্লেখ না থাকায় সে প্রশ্নের মীমাংসা আজও হয় নাই । উপরন্তু তাঁহার পা পিছলাইয়া আলুদ্দম হইবার ঘটনা থেকেও পরিষ্কার আন্দাজ করা সম্ভব নয় যে দমের আলুটি তাঁহার দেহের ঠিক কোন স্থানে অভিব্যাক্তি পায় ।


--
রবিনন্দন ক্রুশো
--
শ্রী রবীন্দ্রনাথ ক্রুশোর জ্যেষ্ঠ পুত্র রবিনন্দন ক্রুশো প্রথম বাঙালি ভূয়াবিষ্কারক (এক্সপ্লোরার) ছিলেন । স্কট ও আমুন্ডসেন সায়েব উত্তর ও দক্ষিন মেরুর অস্তিত্ব ও তৎসংক্রান্ত চুম্বকীয় শৈত্য (সইত্য) আবিষ্কারেরর পূর্বেই রবিনন্দন পূর্ব ও পশ্চিম মেরু আবিষ্কার করেন । এই মেরুকরণ আজো পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী বিকর্ষন শক্তি বলিয়া পরিচিত । প্রখ্যাত দর্শনবিদ কার্লড ম্যাক্স সায়েব এই শক্তির উপর নির্ভর করিয়াই তাঁহার আজো প্রাসঙ্গিক তত্ত্ব – “ইস্ট বিলংস টু ইস্ট অ্যান্ড মেকস বীয়র, ওয়েস্ট ড্রিঙ্কস অ্যান্ড এনলার্জেস ইটস ওয়েস্ট লাইন অ্যান্ড দেয়ারফোর দ্য টু এন্ডস শ্যাল নেভার মীট” –এর স্থাপনা করেন । একবিংশ শতাব্দীর পন্ডিতেরা এই মতের বিপক্ষে “গ্লোবালাইজেশান” নামক পাল্টামত চালু করিয়া কলিকাতায় গ্লোব সিনেমা-র মাধ্যমে পশ্ছিমা অর্থনীতির প্রচলনের প্রচেষ্টা করিলে ভয়ংকর বার্ড ফ্লু তে আক্রান্ত হইয়া পৃথিবীর সমস্ত পক্ষী ফ্লাই ফ্লিউ ফ্লূ হইয়া গেলে বিশ্ব জুড়ে প্রবল অর্থাভাব হয় । শিল্পোদ্যোগ ও কৃষি উভয়েই ওবামা, ওসামা, দামামা ও মামামায় আক্রান্ত হইয়া অবশেষে ঘোর কলিকালের জন্ম হয় ।

পূর্ব ও পশ্চিম মেরু আবিষ্কার কালে এক ভয়াবহ জাহাজডুবির শিকার রবিনন্দন ব্রাজিল ও হংকং –এর সীমানায় পান্তালুন নামক দ্বিপে আটকাইয়া পড়েন ও দীর্ঘ একত্রিশ বৎসর নারিকেল ও কাঁকড়া খাইয়া বাঁচিয়া থাকেন । এই দ্বিপে বসবাসকালীন এক ভয়ানক আদমখোর জনজাতির লাঞ্চ টেবিল হইতে এক অধিবাসীরে রক্ষা করিয়া রবিনন্দন তাঁহার পরিচারক হিসাবে মোতায়েন করেন । উক্ত পরিচারকটি নিজ পরিচয় ও সমগ্র স্মৃতি বিস্মৃত ছিলেন, ফলে রবিনন্দন তাঁহাকে নতুন নাম, পরিচয় ও সচিত্র ভোটার আই ডি কার্ড প্রদান করেন । রবিনন্দন যেই দিন এই অধিবাসীরে রক্ষা করেন সেই দিন শুক্রবার ছিল, ফলে দিন-ক্ষন-তিথি মিলাইয়া রবিনন্দন তাহার নাম রাখেন –“আঠারোইজ্যৈষ্ঠকৃষ্ণপক্ষেদ্বিপ্রহরদ্বাদশঘটিকাদ্বিতীয়শুক্রবার বৃশ্চিকলগ্নে” । পরম কৃতজ্ঞ আঠারোইজ্যৈষ্ঠকৃষ্ণপক্ষেদ্বিপ্রহরদ্বাদশঘটিকাদ্বিতীয়শুক্রবার বৃশ্চিকলগ্নে একনিষ্ট ভাবে দীর্ঘ পঞ্চবিংশতি বৎসর রবিনন্দনের সেবা করিয়া মস্তকে নারিকেল পতনাঘাত হইয়া দেহত্যাগ করেন । প্রিয় পরিচারক আঠারোইজ্যৈষ্ঠকৃষ্ণপক্ষেদ্বিপ্রহরদ্বাদশঘটিকাদ্বিতীয়শুক্রবার বৃশ্চিকলগ্নের মৃত্যুতে তীব্র শোকাবিভূত রবিনন্দন সমুদ্রতটে বসিয়া তিন বোতল নারিকেল মাধ্বী পান করিয়া দেশে ফিরিবার স্থির করেন ও সেই মুহূর্তে নিজ অবস্থা বর্ণনা করিয়া এক দীর্ঘ পত্র লিখিয়া ও তাহারে বোতলে ভরিয়া সমুদ্রে নিক্ষেপ করিতে গেলে তিনি ও তাঁহার হস্তধৃত পত্রসমেত বোতল উভয়েই সমুদ্রে পড়িয়া যান ও এক সুনামি আসিয়া উভয়কেই ভাসাইয়া তমলুক বন্দরে নিয়া যায় । শোক, কারণ ও সমুদ্রবারি পানহেতু বাকরুদ্ধ রবিনন্দন তমলুক তীররক্ষীর (কোস্ট গার্ড) –এর প্রশ্নের জবাব দিতে অক্ষম হইলে তাঁহাকে সোমালি গুপ্তচর সন্দেহে তমলুক জিলা হাজতে বন্দী রাখা হয় । অবশেষে তাঁহার উকিল পরমানন্দ মাহাতো বোতল ও বোতলের তথ্য আবিষ্কার করিলে তিনি ছাড়া পান ও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় অবিলম্বে বঙ্গবীর হিসাবে মাসিক ৫৫২ টাকা পেনশানলাভ করেন ।

সূত্রঃ রবিনন্দন ক্রুশোর জীবনী ; লেখক দানিয়েল ডেঁপো



--
লালবরণ সামন্ত । ইনি সুদূর রাশিয়া ও চীন হইতে বিভিন্নপ্রকার মার্কসবাদ শিখিয়া তাঁহার সাথে তন্ত্র ও আদি ও অকৃত্তিম ভারতীয় সামন্তবাদ মিলাইয়া এক মিশ্র সমাজবাদের প্রতিষ্ঠা করেন । ইহা বঙ্গ সহ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে প্রভূত জনসমর্থন লাভ করিয়া ঘোরতর বিপ্লব আনিয়া ফেলে । এই বিপ্লব চাষী জমিতে রোপণ করিলে পরম আধ্যাত্মিক তত্ত্বসমূহ ও কারখানায় নিয়োগ করিলে সামাজিক বিষয়মুক্তির উপাদান প্রস্তুত হয় । এরি প্রভাবে দীর্ঘদিন ধরিয়া বঙ্গদেশে সামন্ততান্ত্রিক সমানাধিকার চলিয়া আসিতেছে । বর্তমানে এই বিপ্লবের প্রবল সার্থকতা এই বিপ্লবের অপসারণের জন্য ঘটমান নতুন বিপ্লবের মধ্য দিয়া চিত্রিত ।


--
শক্তি বল । বিখ্যাত দেহচর্চাবিদ । খর্বতায় তিন ফুট হইলেও ব্যাপক প্রস্থে তিনি হারকিউলিস-রেও হার মানাইয়াছিলেন । দীর্ঘদিন হলিউডে শরীরচর্চার বিদ্যালয় চালাইয়াছিলেন । কৃতি ছাত্রদের মধ্যে স্যান্ডো, জাঁ ক্লদ জ্যায় গোঁস্যাই, সিলভেস্টার স্ট্যালোন, ও সুবোধ সরকার উল্লেখযোগ্য


--
ষড়যন্ত্র কর । বিখ্যাত দেহতত্ববাদী বিজ্ঞানভিত্তিক সঙ্গীতজ্ঞ । ছয়টি ইন্দ্রিয়কে ষড়যন্ত্র হিসাবে বর্ণনা করিয়া ও তাঁহাদের ভিতরের হরমোনাল যোগাযোগ নিয়া ইনি বিস্তর সঙ্গীত রচনা করিয়াছেন যাহা ঘোর খটোমটো হইবার অপরাধে জনপ্রিয় না হইলেও আজিকার শারীর ও চিকিৎসা বিদ্যার অগ্রগতির জন্য পরম মূল্যবান সম্পদ ।


--
সব্যসাচী সান্যাল ওরফে পাজী সব্যসাচী । ইনি বিস্মৃত নহেন অস্মৃত । কৃতীও নহেন । যেহেতু দুষ্ক্রিয়াও একটি ক্রিয়া বলিয়া পরিচিত সেই হেতু পাজী সব্যসাচীকে এই বিশ্বকোষের অন্তর্ভুক্ত করা হইল । বাঙালি পিতা মাতার স্বাভাবিক মায়া মমতাবশত খঞ্জরে পাহাড়ুকরণ যে মতে হইয়া থাকে সেই মতে এই আপাদমস্তক নুলোও সব্যসাচী নামে অভিহিত হয় । ইনি নিজেরে লেখক প্রমাণ করিতে কালি ঝুলি নিয়া বিস্তর গবেষণার পর নিজ ও বঙ্গভাষার মুখমন্ডলে কলঙ্কলেপন ব্যতীত আর কিছুতেই সমর্থ হন নাই । ফলে আজো বঙ্গভাষা এই নরাধম দুর্বৃত্তের পাশ দিয়া বিদেশী ভাষার মত এক্সট্রিমলি কেয়ারফুলি পলাইয়া যায় ।


--
হতামযদি ভড় । কৃতি বাঙালি ইচ্ছাবিদ ।

(আপডেটে ইচ্ছুক বাঙালি jabaali@yahoo.com- এ যোগাযোগ করুন)

2 comments:

  1. Sabya ei shobdokosh porte aamar 3 din lagloo, jodio mone hoechhilo purotai pore feli ekbaare kintu ekta shabdokosh ki ekdine puro pore fela jai , tahole to Guinness Book of World record e naam berie jabe... joke apart apnar shobdokosh abhabnio, akolponio ek proyas ...tobe type writer, microwave aar Uttor dey bishesh prosongsar dabeedaar...জ , ন , য o jothesto krititwer songe poribeshito... too good Sabya, bishesh kore amar moto bachalder jonyo , jader kachhe Bangla ek modhur taan, tai amar pujoi kichhuu kena hok ba na hok motamuti pate dewar moto ja ja ber hoi sob kine feli aar sara bochhorar rosod kore tarie tarie upobhog kori...ekhon net er juge aar ki bhabna apnader bolge hana di aar peye jai moner rosod... thanks...

    ReplyDelete
  2. Aar ekta kotha 'Panur Khata Jata' kintu sotti jata , jachchhetai rokomer bhalo...

    ReplyDelete