কেন এই পাতা

পানুর ইচ্ছা, লেখক হইবেন । বাঙালি, লেখক না হইতে পারিলে নমো নমো করিয়া পাতের সংস্থান যদি বা হয় জাত রক্ষা হয় না - যথা আঁটকুড়া কুলীন । পানু বিস্তর পরিশ্রম করিলেন । দিস্তা দিস্তা রচনাবলী, অমনিবাস চিবাইলেন । প্রথমে কাব্য টানিয়াছিল, কারণ রস - রসে পাঁউরুটি ভিজিল না । পানু ঘটা করিয়া কিছুদিন রবীন্দ্রসঙ্গীত লিখিলেন (ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতিরম্যায়, আট হাজার বাষট্টি টাকার দরজা, খর্চা কে দ্যায় ! অথবা, কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া, চৌমাথার মোড়ে দিব পেন্টুল খুলিয়া) হাউ হাউ করিয়া লোকে মারিতে আসিল । সমস্ত অবজ্ঞা করিয়া পানু লিখিয়া চলিলেন । যদ্যপি পানুর কলমের তোড়ে কাব্যলক্ষী কোঁ কোঁ, সম্পাদকের দপ্তরে চিঁড়া ভিজিল না । অতঃপর পানুর দুঃখে ব্যাবেজ সায়েব কম্পিউটার আবিষ্কার করিলেন । বাজারে ব্লগ আসিল । পানু ব্লগার হইলেন । এই পাতা পানুর পাতা । যা তা ।

Thursday, January 31, 2013

জগৎপিতা ৯০৮ শ্রী শ্রীমৎ ৯লাধর ৯চ্ছবী (বিশ্বকোষ চলিতেছে)


জগৎপিতা ৯লাধরঃ নেপালের ৯চ্ছবি রাজ বংশের শেষ প্রতিভূ, যিনি সনাতন বৌদ্ধ ধর্মের সহিত সমস্ত সংশ্রব ত্যাগ করিয়া শাক্তত্ব গ্রহণ করিয়াছিলেন । জগৎপিতা ৯লাধর ১৮৭৫ খ্রীস্টাব্দে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং জনপদে জন্মগ্রহণ করেনঃ মাতা ৯লাবতী ৯চ্ছবি, পিতাঃ জগৎঠাকুদ্দা ৯লাসাগর ৯চ্ছবী। জগৎপিতা ১২ বৎসর বয়সে অতীশ দীপঙ্করের জন্মভূমি বজ্রযোগিনী গ্রামে গিয়া হলাসনকেন্দ্রিক তন্ত্র শিক্ষা করিয়া, অধিকতর তন্ত্রশিক্ষার্থে কামরূপ কামাখ্যায় পদার্পন করেন। সেই স্থলে প্রখ্যাত জর্মন দার্শনিক ফ্রেড্রিক এঙ্গেলস-এর সহিত তাঁহার সাক্ষাৎ হয় ও তাঁহার সাধনার মোড়বদল হয় । পূর্বে তন্ত্রবিদ্যায় গুরুবাদ প্রবল থাকিবার কারণে তাহাতে যুক্তিপূর্ণ আলোচনা বা ডায়ালেক্টিক্স-এর কোন পরিসর ছিল না। এঙ্গেলস সায়েবের সহিত আলোচনার প্রেক্ষিতে জগৎপিতা ডায়ালেক্টিক তন্ত্রবাদ নামক সাধনায় লিপ্ত হইয়া পড়েন ও উচ্চউচ্চতর শিক্ষার্থে খোদ জর্মন দেশে গমন করেন । জর্মন দেশে এঙ্গেল সায়েবের সহকর্মী প্রখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী ও দার্শনিক কার্ল মার্ক্স সায়েবের সহিত পরিচয় ও ঘোর ডায়ালেক্টিক আদানপ্রদাণ-এর পর তিনি মার্ক্সীয় তন্ত্রবাদ নামে এক নূতন সাধনা পথের আবিষ্কার করেন । ঐতিহাসিক বরুন ধাড়ার মতে এ হওয়ারই ছিল, ভেবে দ্যাকো, তন্ত্রে কী জরুরী ? না জবাফুল আর রক্ত, এমনকী কারণকেও লোকে লালপানি বলে, ফলে লাল ও লাল মিলে যে লালেল্লাল হবে তাতে আর সন্দেহ কোতায় বলাই বাহুল্য এই প্রগূঢ় যুক্তি মানিতে বিশ্বের পন্ডিতকূলের কোনপ্রকার অসুবিধা হয় নাই । ১৯১৩ খ্রীস্টাব্দে, জর্মনি হইতে রুশ দেশে বেড়াইতে গিয়া জগৎপিতা রুশী বিপ্লবের সম্মুখীন হন । বলশেভিক পার্টির মুখ্য তন্ত্রাচার (পুং পার্টি সদস্যদের নিয়মিত ক্ষৌরকর্মের মাধ্যমে গুপ্তাংগ মসৃণ রাখা) তাঁহাকে যার পর নাই আকৃষ্ট করে ও ফলে ভ্লাদিমির এলাচ লেনন-এর অনুরোধে মার্ক্সীয় তন্ত্রযোগে অর্থডক্স কিরিস্তান তান্ত্রিক গ্রিগরি রাসপুটিনের মোকাবিলায় তিনি রাজী হন । রাসপুটিন যোগ-এর সর্বাপেক্ষা দুরূহ, দূর্গম পথ ভোগযোগ-এ নিতান্ত পারদর্শী ছিলেন ও তৎকালীন পৃথিবীতে এক দূরারোধ্য, দূর্লঙ্ঘ্য, দূর্দমনীয়, দূর্ধর্ষ, দুঁদে, দুশমন হিসাবে পরিচিত ছিলেন । এলাচ লেনন ও জগৎপিতা প্রচূর পরামর্শ করিয়া রাসপুটিনকে ধরাধাম হইতে বিলীন করিবার উদ্দেশ্যে আফ্রিকা হইতে একশত গোরিলার আমদানি করিয়া, রাসপুটিনের কুশপুত্তলিকার দাড়িতে ভোদকা ও শুষ্ক মরিচের গুড়ায় সিক্ত কদলী বাঁধিয়া এই গোরিলাদলকে প্রশিক্ষণ দেন । খিয়োনিয়া গুসেভা নামক এক প্রাক্তন পতিতা ও সন্ত ইলিওদোর-এর নেতৃত্বে উক্ত গোরিলাদল রাসপুটিনকে ২৯-শে জুন ১৯১৪-এ আক্রমণ করে । কিন্তু মহাযোগী রাসপুটিন প্রবল ছুরিকাহত হইয়াও, যোগবলে নিজেরে সারাইয়া তোলেন । এই ব্যর্থতার পর জগৎপিতা ৯লাধর ইংরাজ গুপ্তচর বিভাগ সিস (SIS) এর সহিত গাঁঠবন্ধন করেন ও দীর্ঘ প্রায় দুই বৎসরযাপী পরিকল্পনার অবসানে ১৯১৬ খ্রীস্টাব্দের ৩০শে ডিসেম্বার  যুগপৎ সায়ানাইড, যষ্টি, বন্দুকের কুঁদো ও উকিলের ছদ্মবেশধারী এজেন্ট ০০৭-এর মন্ত্রপূত ওয়েব্লি .৪৫৫ রিভলভার-এ কাম তামাম করিয়া, জারতন্ত্রের কফিনে প্রধান পেরেকটি পুঁতিয়া হোলসেল সমাজতন্ত্রের আগমনের পথ সুগম করেন ।
(ফুঃনোঃ বলশেভিকদের প্রতি প্রীতি রাখিলেও মেনশেভিক গোষ্ঠী জগৎপিতার চক্ষুশূল ছিলেন, কারণ এই ট্রটস্কিপন্থীরা পূর্নাংগ শেভিং-এ বিশ্বাস রাখিতেন যাহা সনাতন বৌদ্ধ আচার বলিয়া সুবিদিত । কথিত, জোসেফ স্তালিন এর ট্রটস্কি হত্যার পিছনে জগৎপিতার ইন্ধনই মুখ্য কারণ ছিল)

Wednesday, January 30, 2013

অংগ মার্জিত (বিশ্বকোষ চলিতেছে)



অংগ মার্জিত
--
জন্মঃ কোদালী পাড়া, জিলা হুগলিঃ আনুমানিক খ্রীস্টপূর্ব ৩৪৫-এ । শ্রী মার্জিত পেশায় সৌন্দর্যশিল্পি ছিলেন । খ্রীঃ পূঃ ৩২৬-এ গ্রীক মহাবীর তৃতীয় আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণকালে তিনি বিশেষ প্রসিদ্ধি লাভ করেন । পারস্য বিজয় সম্পন্ন করিয়া ভারতে পদার্পণ করিয়াই বিখ্যাত কূটকূটনীতিবিদ  শ্রী বিষ্ণুগুপ্ত চাণক্যের কুটিল চালানুযায়ী সমস্ত গ্রীক সেনা কম্বোজদেশী কুখ্যাত চর্ম উৎকুন দ্বারা আক্রান্ত হন ও কামড়ে কামড়ে চুলকানি রোগে জর্জরিত হইয়া পড়েন । ঢোল কোম্পানিও ফেল মারিলে শ্রী আলেকজান্ডার প্রসিদ্ধ সন্ত ঋষি তড়িতানন্দের পরামর্শ অনুযায়ী শ্রী অংগ মার্জিতের শরণাপন্ন হন, ও শ্রী মার্জিতের বগলকুন্তলচারুসভা-র মেম্বারশীপ গ্রহণ করেন । কথিত, অংগ মার্জিত বালক বয়সে এক সুনামির পাল্লায় পড়িয়া ভাসিতে ভাসিতে দূর্গম চীনদেশ ও জাপান দেশের মধ্যবর্তী ওকিনাওয়া দ্বীপে গিইয়া পড়িয়াছিলেন ও তথায় খালি হাত বা কারাটে শিল্পের জনক খোদ প্যাট নোরুয়াকি মোরিতার শিষ্যত্ব গ্রহণ করিয়া ওয়্যাক্স অন ওয়্যাক্স অফ নামক অতি দুরূহ প্রকৌশল আয়ত্ত করেন । এই ওয়্যাক্স অন ওয়্যাক্স অফ কৌশলের মাধ্যমে তিনি গ্রীক সেনার তাবৎ গাত্ররোম  ও তৎলিপ্ত উৎকুনকূলের সমূলে বিনাশ করায় মহাবীর আলেকজান্ডার তাঁহারে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করেন । এই নোবেল পুরস্কার অতি অসাধারণ তাৎপর্যপূর্ণ  কারণ আলফ্রেড বার্নাড নোবেলের জন্মের ২১৫৯ বৎসর পূর্বেই শ্রী মার্জিত ইহা অর্জন করেন । পরবর্তী কালে গ্রীক দার্শনিক মেগাস্থিনিস এই কৌশল আয়ত্ত করিয়া গ্রীকদেশে মহিলা সমাজে ইহার প্রচলন করেন । দূর্ভাগ্যবশত গ্রীস এবং ট্রয়ের যুদ্ধের কারণ হিসাবে ঐতিহাসিকরা ওয়্যাক্স অন ওয়্যাক্স অফ কৌশলকেই দায়ী করে থাকেন । মহাকবি কালিদাস রচিত কাব্যগ্রন্থ অভিজ্ঞানম শকুন্তলম-এর পরবর্তী কাব্যগ্রন্থ আয়ে না বালম-এ ইহার সকরুণ বর্ণনা রহিয়াছে । দক্ষিণ ভারতীয় বংশোদ্ভূত গ্রীক সম্রাট আগা মেনন-এর ভ্রাতা রাজা মেনেলাউস (তর্জমায়ঃ উৎকুন শ্রেণীর উৎপাত মানিয়া রাজ্যপালনকারী নৃপতি), উৎকুন সমস্যায় পিড়ীত হইয়াও ইহার প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা না করিলে পাটরাণী হেলেন, মেগাস্থিনিস-এর শরণাপন্ন হন এবং হেড টু বটম ওয়্যাক্স অন ওয়্যাক্স অফ কৌশলের প্রয়োগ করিয়া বোম্বাই নগরীতে চলচিত্রে অভিনয় শুরু করেন । আপাদমস্তক রোমহী্নাবস্থায় তাঁহার মেহবুবা মেহবুবা নামক রোমহর্ষক নৃত্য দেখিয়া ট্রয় রাজকুমার প্যারিস তাঁহারে প্রেমনিবেদন করেন ও সাইকেলের হ্যান্ডেলে বসাইয়া ট্রয় নগরীতে নিয়া যান । বাকি হোমার-দেবের ইলিয়াড-এ বর্ণিত আছে । শ্রী মার্জিত কতৃক প্রচারিত ওয়্যাক্স অন ওয়্যাক্স অফ কৌশলই প্রচলিত গ্রীক ও রোমান উত্তরীয় ও টোগা শিল্পের পথ সুগম করে । এই শিল্পের জ্ঞান না থাকায় বাকি পৃথিবী আচকান, জোব্বা, পাগড়ির ন্যায় বর্বর পোষাকেই অভ্যস্ত থাকিতে বাধ্য হইয়াছিল (দ্রঃ "নিয়তি কেন বাধ্যতে" চেঙ্গিজ খানের চিত্রের সহিত তুলনীয়)

Monday, January 28, 2013

বিশ্বকবি ও অরণ্যদেব (বিশ্বকোষ চলিতেছে)


বিশ্বকবি ঋষ্যশৃঙ্গ গুছাইত
--
বিশ্বকবি ঋষ্যশৃঙ্গ গুছাইত হাওড়া জিলাস্থিত বগুড়া গ্রামে ১৬১০ খ্রীঃ, ১৯শে পৌষ জন্মগ্রহণ করেন । পিতাঃ জনৈক গুছাইত, মাতাঃ ক্ষেমঙ্করী দেবী । জন্মক্ষণ হইতেই ঋষ্যশৃঙ্গ, তাঁহার অমিত প্রতিভার নিদারুণ ডেমো প্রদর্শন করিতে শুরু করেন – যাঁহার প্রমাণ –“কারো পৌষমাস কারো সব্বনাশ” বাক্যবন্ধটির মাধ্যমে অমর হইয়া রহিয়াছে ।
অমিত প্রতিভার অধিকারী ঋষ্যশৃঙ্গরে কোন বিদ্যালয় নিজ গন্ডিতে ধরিয়া রাখিতে পারে নাই । তর্কশাস্ত্রে অবিশ্বাস্য বুৎপত্তির কারণে মাত্র  ৭ বৎসর বয়সকালে তিনি সমগ্র দেশজ টোল হইতে বিতাড়িত হইয়া হনলুলুদ্বীপে গিয়া নিজশিক্ষার ব্যবস্থা নিজেই করেন । পঞ্চদশ শতাব্দীর বিখ্যাত  পত্রিকা “শারদীয়া তালপত্রে পিচিক” এ তাঁহার সাক্ষাৎকারে ব্যবহৃত এক অনন্য উক্তি আজো সমকালীন ও আমাদের পথিকৃৎ-- “শিক্ষা, ফিক্ষা, সাধোনা ফাদোনা নয়, পোতিভাই আসল, তেমন শিল্পি হলে বাওয়া-- রেশনের থলি দিয়েও দরবারী কানাড়া বাজানো যায়”। পঞ্চদশ শতকের বঙ্গদেশে চরম আধ্যাত্মিক অন্ধকার দূর্বিপাকের মধ্যে তাঁহার কবিতা যেন এক একটি জ্যোতির্শিখা । বিজ্ঞান ও সমাজ চেতনার সঙ্গে আধ্যাত্মিক দর্শন, প্রকৃতিপ্রেম ও চরম রোমান্টিক অন্তর্দর্শন মিলিয়া মিশিয়া এক হইয়া ভিষগরত্ন সুশ্রুতের বটিকার ন্যায় তাঁহার কবিতা এক নিরাময় হইয়া বঙ্গদেশের বাউল কপালে তিলকিত হইয়াছিল । তাঁহার কবিতার সুদূরপ্রসারী প্রভাব থেকে কোন মুখ্য কবিই নিষ্কৃতি পান নাই । তাঁহার বিখ্যাত সনেট “ একটি বিখ্যাত সনেট” নিম্নে দেয়া হইল

বল বীরমম যৌবন নিকুঞ্জে দোষ কারো নয় গো মা
সাড়ে একান্ন মাইল শান্তকল্যান শাল্মলীবীথিডোবা-- পার করেগা ভোলেবাবা
দাঁতে ক্লোরোফিল নিয়ে ঘরে ফেরে হাইটেক বধূ পাল্কী চলে
দুলকি চালে, ছিপ খান তিনদাঁড়, মাল্লারা একটি মোরগের গল্প  বলে

পৃথিবী আমারে চায়, রেখ না বেঁধে আমায়
বোতাম আটকে যদি ছেঁড়ে জামা ভুবনডাঙ্গায়
বাজে বঙ্গো বাজে বীণা- নীপবনে ধিনকিটি ধিনা
ছাঁই ঘেঁটে দেখে নিও মাগুরের পাপ ছিল কি-না

বিড়াল ও সেই সব শিয়ালেরা, পেঁচা ও পিতামহী
লাশকাটা ঘরে নিয়ে গেল পল্লবের স্তূপ ভোরের দয়েল পাখি
আয় তবে সহচরী হাতে হাতে বাতি নিয়া মেঘের কোলে
সূরঞ্জনা অই খানে যেয়োনাকো মহাপুরুষের উক্তির কোলাহলে


মনে রেখ এই তিথি এই পূণ্যমাস
যে করে ভাল কাজ তার হয় স্বর্গবাস

লক্ষণীয়, এই কবিতার প্রভাব বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন কবির কবিতায় প্রতীয়মান – কাজী নজরুল ইসলাম-এর “বিদ্রোহী”, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “একাধিক কবিতা”, জীবনানন্দ দাশের “একাধিক কবিতা” (বিঃদ্রঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “একাধিক কবিতা” ও জীবনানন্দ দাশের “একাধিক কবিতা” এক নহে), রামপ্রসাদ সেনের শ্যামাসঙ্গীত ও গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের “আজ তোমার পরীক্ষা ভঅগবান” এই কবিতার দ্বারা অনুপ্রাণিত । এমনকী পঞ্চাশের দশকের কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও তুষার রায় ও এই কবিতা হইতে অনুপ্রাণিত হইয়া নিজ নিজ কবিতা রচনা করিয়াছেন ।  

কবিতাটিতে উক্ত কিছু ইংরাজী শব্দ নিয়া পন্ডিতমহলে তর্ক রহিয়াছে—যাহার ফলস্বরূপ একশ্রেণীর পন্ডিতবর্গ এই কবিতাটিরে ঋষ্যশৃংগ গুছাইতের পঞ্চদশ শতাব্দীতে রচিত রত্নরাজির একটি হিসাবে দেখিতে নারাজ । পন্ডিত গোবর্ধন মহাপাত্রের মতে “হাইটেক” শব্দটি অত্যন্ত সমকালীন এক শব্দ যাঁহার প্রচলন ইংরাজী ভাষায় বিংশ শতাব্দীর পূর্বে হয় নাই – পন্ডিত হর্ষবর্ধন তলাপাত্রর মতে উহা এই প্রমাণ করে যে শ্রীঋষ্যশৃংগ তাঁহার সময়ের অন্তত ৪০০ বৎসর সম্মুখে বিরাজ করিতেন । প্রখ্যাত বিজ্ঞান-ভিত্তিক কবিতা সমালোচক বর্ধন পাত্রের মতে, এই কবিতায় “হাইটেক” শব্দটি আসলে পাছার ভুল, আদতে উহা “হাইটাক” । শ্রীবর্ধন পাত্রের এই থিয়োরির চরম বিরোধিতা করিয়া পন্ডিত গোবর্ধন মহাপাত্র বলেন--  স্ত্রীজাতির মাথায় টাক এক সোনার পাথরবাটি মাত্র । টাকের জিন “ওয়াই” ক্রোমোজমে অধিষ্ঠিত থাকে – অতএব “বধূর মাথায় টাক” থিয়োরি সর্বতোপ্রকারে ভ্রান্ত । বিজ্ঞানী বর্ধন পাত্র এই বক্ত্যব্যের চরম বিরোধিতা করিয়া বলেন – গোবরা শালা পাগোল, জিন থাকে প্রদীপে, ক্রোমোজমে বা যমের দূয়ারে নয় – নিজ সিদ্ধান্তের সমর্থনে ইনি শ্রদ্ধেয় কবি যতীন্দ্রনাথ সরখেলের “বঁধূর মাথায় টাক ছিল/ সেই টাকে তেল মাখ ছিল” কবিতাটির উল্লেখ করেন । “ক্লোরোফিল” শব্দ নিয়াও জল কম ঘোলা হয় নাই । তবে শ্রী বর্ধন পাত্র হেরোডেটাসের “ক্লোরোফিলিয়া ফিকান্ডিটিয়াস (তর্জমায়” সবুজদ্বীপের আদিরহস্য)” গ্রন্থটি হইতে লাইন বাই লাইন তুলিয়া প্রমান করেন – যে উক্ত শব্দ সৃষ্টির আদি হইতে বর্তমান ।  

--------------
অরণ্যদেব পুরকায়স্থ ঃ পিতা কিট ওয়াকার , মাতা ডায়ানা পামার ওয়াকার ; আদি জন্ম আফ্রিকা মহাদেশে । সুন্দর বনে কুখ্যাত হার্মাদ “বোম বেটে খান”-এর মোকাবিলায় আসিয়া অরণ্যদেব স্থানীয় সুন্দরী বায়না আলমের "লভে" পড়িয়া পাকাপাকি ভাবে সন্দেশখালিতেই রহিয়া যান ও বিবাহপোলক্ষে  “পুরো কায়স্থ” ধর্ম গ্রহণ করেন । আফ্রিকায় তাঁহার অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে “ডেভিল” নামক এক দন্তলুপ্ত নেকড়ে ও “তুফান” নামক এক বেতো ঘোড়া ছিল । ইহাদের মায়ায় কাতর অরণ্যদেব দেশীয় বনধিকার বোর্ডে একটি ঘোড়া ও নেকড়ে পোষ্য রাখিবার নিমিত্তে আবেদন করিয়া অকৃতকার্য হইয়া অবশেষে চোর বাজার হইতে একটি উটপাখির ডিমের অতিকায় ডেভিল কিনিয়া এক জার ফর্মালিনে রাখেন ও বিখ্যাত “লা ওঠ্যালা” কোম্পানি হইতে একটি মজবুত চায়ের কাপ ক্রয় করেন । কথিত, তাঁহার ফর্মালিন প্রিজার্ভিত ডিমের ডেভিল সময়ে অসময়ে দাঁত খিচাইয়া লোকজনকে ভয় দেখাইতে পারঙ্গম ছিল । ফর্মালিন ফুরাইয়া গেলে তাহাতে যার পর নাই ছত্রাকের সংক্রমণ হয় ও অরণ্যদেব দূরারোগ্য বোগদাদী দাদে আক্রান্ত হন । এই ভয়ানক দাদের কারণে ডুপ্লিকেট ঢোল কোম্পানীর মলম ক্রয় করিতে করিতে অরণ্যদেব সর্বস্বান্ত হইয়া খুলি আংটি বিকাইতে বাধ্য হন । ও অবশেষে “বোম বেটে খান”-এর দলে ভিড়িয়া বাংলা সিরিয়াল লিখিতে ও অভিনয় করিতে শুরু করেন । তাঁহার অভিনীত সিরিয়ালের মধ্যে “মীনা বাজার মে চীনা” অভূতপূর্ব সাফল্যের মুখ দেখিয়াছে । তাঁহার অপর জনপ্রিয় সিরিয়ালগুলি হইল-- "এক বৈশাখে দেখা হল দুজনায়" (উত্তপ্ত প্রেমভিত্তিক সিরিয়াল), "বাথরুমে হল পরিচয়" (সামাজিক অবক্ষয়-ভিত্তিক), এসেছে শ্রাবণমাস (কৃষি ভিত্তিক), "মন তাই ভাবছে" (মনস্তাত্বিক থ্রিলার), "কী জানি কি হয়" (আধিদৈবিক, আধিভৌতিক) । অরণ্যদেবের মুখোশ বঙ্গদেশের সেরা অভিনেতা হিসেবে গত দশ বৎসর "মাসিক আনন্দপোক" পত্রিকার তরফ হইতে  প্রথম প্রাইজ-এর সম্মান পাইয়া আসিতেছে ।