কেন এই পাতা

পানুর ইচ্ছা, লেখক হইবেন । বাঙালি, লেখক না হইতে পারিলে নমো নমো করিয়া পাতের সংস্থান যদি বা হয় জাত রক্ষা হয় না - যথা আঁটকুড়া কুলীন । পানু বিস্তর পরিশ্রম করিলেন । দিস্তা দিস্তা রচনাবলী, অমনিবাস চিবাইলেন । প্রথমে কাব্য টানিয়াছিল, কারণ রস - রসে পাঁউরুটি ভিজিল না । পানু ঘটা করিয়া কিছুদিন রবীন্দ্রসঙ্গীত লিখিলেন (ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতিরম্যায়, আট হাজার বাষট্টি টাকার দরজা, খর্চা কে দ্যায় ! অথবা, কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া, চৌমাথার মোড়ে দিব পেন্টুল খুলিয়া) হাউ হাউ করিয়া লোকে মারিতে আসিল । সমস্ত অবজ্ঞা করিয়া পানু লিখিয়া চলিলেন । যদ্যপি পানুর কলমের তোড়ে কাব্যলক্ষী কোঁ কোঁ, সম্পাদকের দপ্তরে চিঁড়া ভিজিল না । অতঃপর পানুর দুঃখে ব্যাবেজ সায়েব কম্পিউটার আবিষ্কার করিলেন । বাজারে ব্লগ আসিল । পানু ব্লগার হইলেন । এই পাতা পানুর পাতা । যা তা ।

Sunday, March 15, 2015

কিছু কবিতা

গল্প
--
আলো এল।
ডিস্ট্র্যাকশন থেকে
আলো এল
তাকে আমি বোধি না ব্যাধি কীইবা বলব?

যত্নিয়ে রেখে দেব দস্তাখনিতে
খাঁড়ির ভেতর অন্ধকার করে?

অথচ অন্ধকারে এলে
পর্দার ফ্রীল থেকে

পোষাকের খসখসে নীরবতা থেকে
অ্যানাটমি ক্লাসের মতন
মানুষের পৃথিবীতে অসংগতি থাকে
মাটির নীচে সমস্ত প্রকারভেদে মাটিই অটুট থাকে

গুমখুন, গুপ্তধন, সিলিকাম্যামথ—সমস্ত গল্পই ভালো
তবে এ’ও জানি—
যা দাঁড়ায়, তা শুধুই গল্প নয়

আড়ষ্টতা
---
যে আমাকে টুকরো টুকরো
ক’রে ফের সপাটে জুড়ে দেয়
এমনকী ঘুমের ভেতর
তার হাসির ওপর দিয়ে

অভয়ের ওপর দিয়ে
কার্বলিক অ্যাসিডের একটা রেখার
ওপর দিয়ে সমীকরণের মত হেঁটে যাওয়া
এ’টুকুই যাওয়া

ক্রোমরং সৈকতে পড়ে আছে নীল জীন
পায়ের কাছে এসে হতোদ্যম
হয়ে আছে খনিক কাঁকড়া
চোয়ালের ওপর

একটা এগিয়ে আসছে আড়ষ্ঠতা
এমন দিশা নিয়ে এগিয়ে আসছে--
তার স্বপ্নের আঁচে চামড়া মুচড়ে উঠছে

 ভাষা-২
--
আমার মুখের থেকে সরল নৈঃশব্দে
অচেনা মুখের দিকে দৌড়ে গেল -- সেই আমার ভাষা
আমি হতবাক দেখি দপদপ
করে তার নিভে যাওয়া র‍্যাম্পের ওপর

কোথাও প্রস্তুতি ছিল—
অতীতে, ভবিষ্যতে
মাঝখানে শুধু নিকটের কাছে
দূরের প্রতীত হয়ে থাকা

ছিল সবকিছু
পাকস্থলির ভেতরেই ছিল
অম্লআলোকে, দূর্বিপাকের মত
সমস্ত শিষ্ঠতা মেনে, সারাৎসার মেনে

আর কোথাও অনড় চলেছিল
চমক ডিঙ্গিয়ে বিস্তারের দিকে
যেন তার ফিরে আসা বাকী
ক্ষণিকে ও ক্ষারে


সজদা
--

দেখতে দেখতে তুমিও মাধবী
অনুমান থেকে উঠে যাও খরখরে ছাদে
অসময়ে বৃষ্টিবাদলায় চাঙ্গা হয়ে ওঠো
নিয়মের ভেতরও মোচড় হয়ে থেকে যাও

তবু কেউ বড় হয়ে উঠলো না
এমন কী গোপনেও না
হাত ছাড়াতে গিয়ে আঁকড়ে ধরল
ছুরি বসনের ভেতর মুখের ভেতর
কাচের মুর্শিদ তুমি শূন্যেও ভারা বেঁধে

ফেল আমায় নির্দেশ দাও ত্রিশতলা জানালা
সাফের—আমিও মোমিন আমি নিরিখে আঙ্গুল
রেখে অর্জন করি জড়তাতরল বস্তু থেকে নিষ্ক্রান্তি নিয়ে
ঢুকে পড়ি কাঠের বাস্তবে—আর প্রাণপণ প্রার্থনা করি

সত্য কর হে তুমি অভিকর্ষ বল

ভাষা-৩
--
অভ্রের দিনকালে এলে, নীল ক্ষেতে
নিপুণ আঙ্গুলে ফলের খোসাটি খুলে
আমাকে দেখালে ধুধু শূন্যতা আর তার
সান্দ্র সুবাস স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতিগুলি

দূর মরে এলে একদিনের জন্য রাত নামে
পরদিন একদিনের জন্য সূর্য ওঠে
যারা এর মধ্যেই বার বার আনাগোনা করে
তারা দেখতে পায় স্তব্ধতাকে টেলিফোনের

তারের ওপর যেন সে সারাজীবন শুধু
ঝাঁপিয়ে পড়ার মহড়া দিয়ে যাচ্ছে
আর তার সমতল ছায়া ফুঁড়ে বেরিয়ে
আসছে অজস্র উঁচুনীচু কালো কালো ভাষা

অর্থ
--
ছিল বীজ। ছিল বসবাস। শেষরাতে
ঘুমের ভেতরে হাতড়ে হাতড়ে খোঁজা
নিজের কন্ঠস্বর—পায়ের ছাপ দেখতে দেখতে
নিজের মধ্যে ফেরা-- এইটুকু শুধু

পূর্ণতার খোঁজ-- অন্তত আমার মত
বিচ্ছিন্নতাকামী মানুষের।
ভোর হয় ভোরের মতই       তড়িঘড়ি
স্নান সেরে শিষ দিতে দিতে

অ্যানাটমি ক্লাসে ঢুকে যাই       স্ক্যালপেল
হাতে         মৃদু হাসি              মাথা নাড়ি
আর বার বার আশ্বস্ত হই— সমষ্টির থেকে সরে এসে
আমরা কেউ কাউকে কোনদিন বুঝে উঠবো না

একক ভাবে প্রত্যেকটি প্রাণী একেকটি
অগম্য ভাষা

তিনটি কবিতা

মন্ডি
---
ট্রেন থামে। সূর্যোদয়ের কাছে
চাষাভুষো স্টেশনে। জলের শব্দ হয়
ধীরে পাতা আশ্লেষে খুলে আসে বেগুন ঢ্যাঁড়শ
কলাইয়ের ক্ষেতে

আঙ্গুর বাগান থেকে কানাকানি শুরু হয়েছিল
অবভাস লেগেছিল
রিঠা শিকাকাই চুলে দূরত্বে
খল ভরসায় 


বেড়াতে বেড়াতে এলে
তুষার থেকেই এলে স্বপ্নের ভেতর
জামা খুলে দেখালে জরুল
বৃন্তের কাছে শেষ টেস্টামেন্ট হয়ে

মলিন ম্যাপের দিক-নির্দেশ হয়ে
তলিয়ে যাচ্ছে রাত পার করে, সূর্য পার করে
কোঠা বাড়ির দিকে ঘন হয়ে উঠছে
প্রচ্ছদ, ফিকে হয়ে উঠছে অক্ষর

আমি তো ততটা স্থিতধী নই যে কিছু কিনতে চাইবো না
তেমন নিরীহ নই যে পকেটে একশো টাকার একটা নোটও থাকবে না।

ভাষা-১
---
ছিল সবকিছু। স্নেহের নীচেই ছিল
সাবেকি মিটসেফে রেকাবি দিয়ে ঢাকা
দু’খানি সন্দেশের মত নির্জীব
চলেছে সুখের রেখা সুখনা নদীর খাতে

শোকের ওপর উঠতে উঠতে হাত
ছেড়ে দিলে সম্প্রতি মুঠিও তবে
মৌলিক হয়ে উঠতে চাইছে
ধরতে চাইছে না অর্থ ও বিচ্যুত

অনুভূতি কল্পছবি, গুহার গায়ে দাগানো
রঞ্জক তবে কী ভালই ছিলে
জানালার গ্রাসে ধারাবাহিক পাতা
খসায় আর হাওয়া যেখানে ইস্পাতের

লাইন ফেলে গেল সারল্যে অবিচল থেকে
কয়লা খাদান থেকে ইস্টারের ডিমগুলোর দিকে

প্রতিবিম্ব
---
কতদিন পরে ফিরে এলে তর্জনী থেকে
নির্দেশ থেকে রক্তজালিকা থেকে
ঢুকে গেলে বুকের পেশিতে
সুগন্ধী নিয়ে খেলতে খেলতে

খসে পড়ল
খয়েরি ভাঙা চোখ থেকে
যেন ডিসলেক্সিকের মাথার ভেতর
জলছবি অক্ষরের সম্পর্কগুলো

দূরে চিৎকার ছিল
বালির ওপর থেকে পায়ের যমজ
হেঁটে গেল স্বপ্নের ভেতর
চেতনা চেতনা বলে ডাক দিল

কেউ চৈতন্যের কন্দর থেকে আর
বৃষ্টিও ভারী আবছা হয়ে এল
আয়নার গায়ে প্রসাধনী চিরটা
কালের মত এঁটে গেল

Tuesday, March 3, 2015

বিশ্বাস

তুমি এলে,
ইন্দ্রিয়র ভ্রান্তি থেকে এলে
ঘর দোর শিরা ও মগজ
গুছিয়ে তোলার কালে
আমাকে দেখালে সংশয় কীভাবে
ম্যাচিওর করে তোলে মদ ও মানুষ
জন্মের স্ট্রাকচার ফাটিয়ে এসে অর্জন করে
ব্যথা ও সংবেদ


বিশ্বাসীর সব আছে --
প্রত্যয় আছে, প্রতিক্রিয়াও আছে

শুধু ব্যথা নেই
অতিক্রম নেই
ঈশ্বর নেই

স্ফটিক

মদে ভর দিয়ে ঢুকে পড়ছে মানুষ
বেরিয়ে আসছে মানুষের থেকে
মাথা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে জগত ও বিস্তার
কী যেন আলতো ছিল কবিতার মত?

উল্লেখ করার মত অস্ফুট
একটা ভয় এল
যদি শুতে চাই, প্রবিষ্ট হয়ে
যাপনের নিরাকার, অস্থির বোধব্যাধি নিয়ে

একটু গুমরে উঠি--
ফাঁকা কলসের মত প্রতারণাহীন
প্রতিশ্রুতিহীন
একটা বধির শব্দ চলে যাচ্ছে
ভাবপ্রবণতা থেকে ছুটি নিয়ে
নেমে যাচ্ছে জলের ভেতর

আচ্ছন্নতা আমাকে স্বচ্ছ করে তোলে
কোমর ধরে সরিয়ে দেয়
জানলা থেকে লেস থেকে নিগ্রহ থেকে
দক্ষতার ঝুলকালি থেকে