কেন এই পাতা

পানুর ইচ্ছা, লেখক হইবেন । বাঙালি, লেখক না হইতে পারিলে নমো নমো করিয়া পাতের সংস্থান যদি বা হয় জাত রক্ষা হয় না - যথা আঁটকুড়া কুলীন । পানু বিস্তর পরিশ্রম করিলেন । দিস্তা দিস্তা রচনাবলী, অমনিবাস চিবাইলেন । প্রথমে কাব্য টানিয়াছিল, কারণ রস - রসে পাঁউরুটি ভিজিল না । পানু ঘটা করিয়া কিছুদিন রবীন্দ্রসঙ্গীত লিখিলেন (ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতিরম্যায়, আট হাজার বাষট্টি টাকার দরজা, খর্চা কে দ্যায় ! অথবা, কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া, চৌমাথার মোড়ে দিব পেন্টুল খুলিয়া) হাউ হাউ করিয়া লোকে মারিতে আসিল । সমস্ত অবজ্ঞা করিয়া পানু লিখিয়া চলিলেন । যদ্যপি পানুর কলমের তোড়ে কাব্যলক্ষী কোঁ কোঁ, সম্পাদকের দপ্তরে চিঁড়া ভিজিল না । অতঃপর পানুর দুঃখে ব্যাবেজ সায়েব কম্পিউটার আবিষ্কার করিলেন । বাজারে ব্লগ আসিল । পানু ব্লগার হইলেন । এই পাতা পানুর পাতা । যা তা ।

Tuesday, February 17, 2015

বসন্তকয়েক



বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
হুড়মুড় করে ঢুকে গেলে অহেতুচেতনে
দরজার ধারণাকে আধখানা  করে
ঢুকে গেলে সামাজিক তোয়াক্কা ছাড়াই

আমার ভেতরে ছিল স্থানুজল
জলের ভেতরে ছিল
শূন্যতাসমেত
একটা নিমজ্জন
--আমারই তীর্যক অবয়ব
আর তার অবস্থানটুকু

তাকেও তো প্ররোচনা দিলে
কানকোয় ফুসফুসে ঢুকে গিয়ে
আমাকে বোঝালে তুমি--
মাছকেও মন্ত্রণা দিলে--

জালই জীবন


বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
রাত্রি নামছে
কুকুরের ডাক এসে
গেঁথে যাচ্ছে বন্ধ জানলায়
ছবি হয়ে উঠছে
দৃশ্য বলতে এটুকুই ছিল

ছায়া বাদ দিলে ছবিকেও শূন্যতায় পায়
--একথা জেনেও তুমি
ছায়ার শরীর থেকে সরিয়ে রাখলে
ধার ও কাঁপন

একমাস নদীতে ড্রেজিং চলেছিল
গতকাল উপচানো পাড়ে  পলি ও বালির স্তুপে
আমাকে দেখিয়েছিলে

তামার আঙ্গুলে ধিকিধিকি হাড়ের আংটি

 
বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
যতটা অধরা ছিলে ততটা কবিতা
ধরে নিলে ইগোর বিলাস
স্বাতন্ত্রে করুণায় এমনকী প্রমার ফাটলে

ভালো ছিলে কাচের ওপারে
আমার অবস্থানও ভাল ছিল-- যদিও গৌন
কিছুটা মীমাংসা ছিলসেটুকুও প্রাসঙ্গিক নয়
মাংসরান্নার একটা গন্ধ উঠেছিল
--তার ভালো লাগাটুকু আছে

অথচ আমি মাংসের ভেতর ঢুকে দেখেছিলাম
জটিলতা থেকে দেখা
ক্ষয়ের ভেতর থেকে দেখা
--এটুকুই দেখা
--সারল্যে কোন দেখা নেই
 
বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
এই বিস্ময় থেকে ছুটি নিয়ে
নিরাগ্রহের কাছে থিতু হলে
তো ওই ছুটে গেলে অনুরোধের আসরে

স্ববিরোধ আছে যার তার আর কীসের অভাব?

আমার তো বসবাস প্রমার ফাটলে
শংকাসাকুল্যে
সুস্থ না হলেও ভাল আছি সন্দেহের দিকে
চাকুর নোকে পিঠ রেখে

শুধু
ভয় হয় শূন্য ট্রাপিজ দেখে
শিউরে উঠতে যদি ভুলে যাই

বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
মোমের মাছের গায়ে আঁশটে গন্ধ ফিরিয়ে আনলে
আর বঁড়শিতে টোপ হয়ে বসলে সদিচ্ছায়

কিছুটা তো স্পৃহা ছিল পশুপালনের
তালের টুকরি বোনা
এমনকী সূচীশিল্পে ভুবনের আকাশের দিকে
ন্যস্ত করে দেয়াসীমফুল


অথচ
শাশ্বত ছিল
বার বার মাছ হয়ে ওঠা
বার বার টোপে ঠোকরানো


বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
         দূর কে দৃষ্টি করে দিলে
         সন্ধান থেকে বেপথু করলে অণু
         --
আমার তো ভাল লাগল না--তোমার এই ছোট ছোট ভাঙা
                                                            পুতুল পুতুল গড়া

যদি ভাঙ্গতেই হয়-- আত্মপ্রসাদটুকু ভাঙ্গ
সংস্কারের মূল থেকে ভাঙ্গ
নিজেকে দুভাগ করে গড়ে তোল দ্বিধা

আমি দেখেছিলাম
তোমার ভেতরে গুমগুম করছে
আগুন পাহাড়
ধাতু থেকে ঠিকরে উঠছে
তাপ ও অনিশ্চয়
অথচ তুমি
ক্রাইসিস থেকে দূরে
পাহাড়ে গুম্ফায়
কবিতা কবিতা মুখে
নিশ্চিন্তে আপেল চিবোচ্ছ..


বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
হাপর থেকে বেরিয়ে আসলে
অন্য এক প্রকারের নিলে বুক খুলে শ্বাস
চামড়ায় অর্জন ফুটিয়ে তুললে মরিচায়

এতটুকু মূল্যবান শুধু--এই অবিশ্বাস
গঠনের থেকে দূরে এসে
সমাদরে রাখা বেড়ালপুরীষ
হাসপাতালের দিকে ছেড়ে দেয়া
                                     ধনুষ্টংকার

ধাপে ধাপে তোমাকেও প্রস্তুত করি
ছোট ছোট সিদ্ধান্ত থেকে
সিদ্ধান্তে এনে
অবশেষে

ঠেলে দেবো    খা-খা শূন্যতায়

Wednesday, February 11, 2015

বসন্ত আরো দুই



বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
জানলা থেকে হাত নাড়লে
হাত নেই একথা জেনেও
হাত ও শরীরের ধারণা ছাড়াই
এমন জানলা থেকে

যে আমাকে ভেতর থেকেও নিরাপদ রাখে
পড়াতে বসায়, বোঝায়, সাম্প্রতিক ইতিহাস নিয়ে
ফেসবুকে আমার কমেন্টগুলো নিয়ে  কেউ কিছু আপত্তিকর
ভেবে উঠছে না।  আমি ফুলদানির থেকে অ্যাকোয়ারিয়াম থেকে
টবের ক্যাকটাস মাছের অসন্তুষ্টি থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ...
এমনকী ফ্রীজের গায়ে চেটকানো বর্ণলিপির থেকেও

অথচ
                 আমি বাগানের থেকে বেড়ার থেকে...
                 বেড়ার ওপর জমা বরফের থেকে...
                  ভারসাম্যহীন বহেড়া গাছের থেকে ...
                  কেন্দ্রের ওপর জমা প্রান্তিকতার ঝুলধুলো থেকে...


 
বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
দ্বিধার বদলে গতি জুড়ে জাড্যতা দিলে
কেমন সাবলীল    খসড়া থেকেই
পূর্ণতা খুঁজে পেলে প্রস্তাবে এসে

অথচ আমি দেখেছিলামযুক্তির নিয়ন্ত্রণটুকুই যুক্তি
বাকী তো ঈশপের খুলির ভেতরে অর্কিডছেঁড়া কুয়াশা

ভালো করলে না তুমি গঠনের দিনে
ভরকেন্দ্র অন্যত্র রোপণের দিনে
চেয়ে দেখলে না
বৃক্ষ যেদিকে বাড়ে তাপে ও আর্দ্রতায়

                                                          প্রতিবিম্বে বেড়ে ওঠে ঘুণের মরাল

Tuesday, February 10, 2015

তিন বসন্ত



বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
নীচু একটা সংশয়
       একটা প্রবাহে
ঝাঁপ দিয়ে সমীচীন হলে

পায়ের নখের থেকে উপড়ে উঠছে জেদ
একটা বমিভাব চারিয়ে উঠছে নাভির কন্দর থেকে
এসময়ে পেচ্ছাপও পেল

অভিজ্ঞতার দিকে ডাক দিলে
অবিন্যাসের থেকে ডাক দিলে
জৈবিক সাশ্রয়টুকুর  গাঁট ছিড়ে
খনিজ আত্মার মত আঙুল বাড়ালে

জল কে চিনিনি আমি জিভে ও বিসর্জনে
বরং দেখেছি তাকে হাড়ের স্ট্রাকচারে
দেখেছি কী ভাবে সে অণুর ফোকরে ডুকে
স্থাপত্যে স্টেবিলিটি দেয়

আমি জানি সংবেদ বড় হয়
সন্দেহে ভুগে

ভঙ্গুরতার দিকে বেড়ে ওঠা
      এইটুকু ... আর কোন জটিলতা নেই


বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
প্রতিবিম্বের দিকে হেঁটে গেলে
                      পোষা অনন্তের দিকে

শাদা স্বপ্নের দিকে পাশ ফিরে শুয়ে আছে মাথা
             সম্পর্কের থেকে দূরে
অনিবার্যতার থেকে দূরে
              একটা জলের মত শব্দ উঠছে অবিচ্ছেদ্য ঘরদোর বেয়ে                                         দাহ্যতা বেয়ে

সমতল থেকে ডুকরে উঠছে স্টীলের বিভাব

আর তুমি নিমেষ থেকে ছাড়িয়ে আনলে নিবিষ্ঠতাটুকু
খাঁচার মুনিয়ার দিকে নামিয়ে আনলে ধনেশের
                       একাগ্র ক্ষিধে


বসন্তপর্যায় গেলো, আমাকে করলে না তুমি ভালো
যতিচিহ্নের দিকে বাড়িয়ে ধরলে আয়না
অব্যয় থেকে কেড়ে নিলে অনমনীয়তা
কিছুটা তো বিকৃতিই দিলে হেতু ও দিশায়

হলুদ একটা ক্রম ছিল
যাকে তুমি জীর্ণতা ও যৌনতাদুধারেই সুখী রেখেছিলে
এমনকী ঝড়ের আগেই
                   ঝরে পড়ায়
সুলভ ট্যাক্সিতে

পরিতাপের মাঝেই গাঢ় হয়ে উঠছে দুধ
বেঁকেচুরে উঠছে প্রোটিন
গড়িয়ে যাচ্ছে আনকোরা বিভক্তির দিকে