কেন এই পাতা

পানুর ইচ্ছা, লেখক হইবেন । বাঙালি, লেখক না হইতে পারিলে নমো নমো করিয়া পাতের সংস্থান যদি বা হয় জাত রক্ষা হয় না - যথা আঁটকুড়া কুলীন । পানু বিস্তর পরিশ্রম করিলেন । দিস্তা দিস্তা রচনাবলী, অমনিবাস চিবাইলেন । প্রথমে কাব্য টানিয়াছিল, কারণ রস - রসে পাঁউরুটি ভিজিল না । পানু ঘটা করিয়া কিছুদিন রবীন্দ্রসঙ্গীত লিখিলেন (ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতিরম্যায়, আট হাজার বাষট্টি টাকার দরজা, খর্চা কে দ্যায় ! অথবা, কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া, চৌমাথার মোড়ে দিব পেন্টুল খুলিয়া) হাউ হাউ করিয়া লোকে মারিতে আসিল । সমস্ত অবজ্ঞা করিয়া পানু লিখিয়া চলিলেন । যদ্যপি পানুর কলমের তোড়ে কাব্যলক্ষী কোঁ কোঁ, সম্পাদকের দপ্তরে চিঁড়া ভিজিল না । অতঃপর পানুর দুঃখে ব্যাবেজ সায়েব কম্পিউটার আবিষ্কার করিলেন । বাজারে ব্লগ আসিল । পানু ব্লগার হইলেন । এই পাতা পানুর পাতা । যা তা ।

Monday, March 12, 2012

অস্তিত্ব একটা আকীর্ণতা মাত্র
মাঝরাস্তা থেকে যে ঝাঁপ দেয়
খাদে, পরিখায়
আর গুটিয়ে নিতে চায় নিজেকে
আরও ঘন এক অস্তিত্বের মধ্যে
অথচ ছড়িয়ে পড়তে চায়
চিহ্ন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চায়
--
আমার চিহ্ন জিরোচ্ছে তোমার চিহ্নের ওপর
ফুল ফোটা আর শুকিয়ে যাওয়ার মধ্যে
বন্ধ হয়ে এল কবরখানার দরজা
বন্ধ ঘরে যে দিকেই ফিরি
অস্বীকারে হাত ঠেকে যায়
চিহ্নের বিপক্ষে যত কথা হল
সব কথা চিহ্নিত হয়ে থেকে গেল
মাঝখান থেকে
গুহাচিত্রের গায়ে আঙ্গুল দাগানোর
গল্পগুলো আবছা হয়ে গেল
আমাদের অভিসন্ধি, যুদ্ধবিরতি, জলছবি
সব
--

যেমন শূন্যতা একটা প্রবাহ
যা দৃশ্যমানতার কাছে এসে ভেঙ্গে যায়
আর সমস্ত কণাকেই মানানসই মনে হয়
স্থিতির বিপক্ষে, গতির বিপক্ষে
আমাদের আর কিছু বলার থাকে না
নীল দরজা থেকে
বেরিয়ে আসা কাতরানোর আভাসগুলোকেও
আর বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না
--
থেমে যাওয়া একটা প্রক্রিয়া যে
নিরন্তর গতির মধ্যে
ঝালিয়ে নেয় নিজেকে
আড়ষ্ট কাঁধ নিয়ে
আগুন পোহায়
পূর্ণতা নিয়ে ভাবতে ভাবতে
পূর্ণতা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়
ঘষটে ঘষটে এগিয়ে যায়
শূন্যতার দিকে
শূন্যতাসমেত
--

Thursday, March 8, 2012

বিশ্লেষণ থেকে যে তোমাকে ছাড়িয়ে আনে
আর মেলে দেয় অন্ধকারে
সমাধিক্ষেত্রে, লবিতে, রাস্তায়
নতুন এক বিপন্নতায়
সেও এক দ্বিধা

দ্বিধার পরত খুলে দেখ
তুমি নেই

কেউ নেই
--
বিস্ময় যখন
ঘনীভূত হয়
আর নিঃশব্দে অনুসরণ করে
আমাদের সমস্যাদের
উৎকণ্ঠাদের
আর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নকল
করতে করতে হেরে যায়

মৃদু শেকলের শব্দ ছাড়া
আর কিছুই কানে আসে না
স্থিতিও না
--
আলো ও অন্ধকার দু’ই ক্রিয়া
পদ্ধতি নিয়ে, সিদ্ধান্ত নিয়ে
কোন মাথাব্যাথাই যাদের নেই
শুধু পরস্পরকে
প্রতীত করে তোলা
আবছা করে তোলা
ছাড়া কোন কাজ নেই

দ্বিধা ও বিশ্বাস
নেপথ্য বানায়
নিজেরাই অভিনয় করে
রোল বিনিময় করে
কুকুর ও শেকলের

এই সব এক মাংসল পৃথিবীর কথা
সংশয় ও সঙ্ঘাত ছাড়া যার কোন অস্তিত্বই নেই
--
আলো নিভে গেলে
স্পর্শ সরল হয়ে ওঠে
মুহূর্ত থেকে মুহূর্তের মধ্যে
পায়চারি করে
না দেয়ালের কথা, না জানলার কথা
কোন কিছুই আর মনে পড়ে না

দ্বিধাই যখন একমাত্র ইন্দ্রিয়
কোন ঈশ্বরের কথাই মনে পড়ে না
--
এরপরও কতখানি উদাস থাকবো ঈশ্বর
কতবার প্রার্থনার ভেতর
প্রকৃতির ভেতর সুস্থ হয়ে উঠতে চাইবো
দেনাশোধের মত সরল রেখা হয়ে উঠবো

নিরিখের ভেতর চিহ্ন খুঁজে পাচ্ছি না আর
ঘটনার ভেতর নিজেকে

স্তরে স্তরে সূর্য উঠেছে
স্তরে স্তরে গরমের ছুটি
--

Monday, March 5, 2012

যে সমস্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে
চোখ বোজ, দেখ
তারাই অনুসরণ করছে
বরফের ওপর তোমার পায়ের লাল ছোপ
অথচ তাদের চিহ্ন
দেখতে পাওনি

আজ উত্তেজক মুহূর্তের মধ্যে
শক্ত ও বিহ্বল মুহূর্তের মধ্যে
তাদের স্বরূপগুলো যদি বিম্বিত হয়

একজোড়া পায়ের মশমশ
দাঁড়িয়ে পড়ে বালির মধ্যে
বরফের ধারণার মধ্যে

কোন বিশ্বাসকে বেছে নেবে ?

--

এই হল গতির কথা
যার অন্ধত্ব আমাকে চিরকাল অবাক করে
তথ্য থেকে বার করে আনে

আর এই হল স্থিতির কথা
যার দৃশ্যময়তা আমাকে তথ্যের প্রতি
প্রলুব্ধ করে

আর এই হল স্বচ্ছতার কথা
যা গতি ও স্থিতির মাঝখানে
আমার গৌণতা নিয়ে খেলে

--
এই সব স্থিরচিত্র
নিজেকেই করুণার কথা
নিখিলের পরে আরও যে নিখিল
প্রবাহে, মন্থরে
তার ছায়া বারবার
অক্ষরে লাগে
আর ধীর হয়ে আসে কথা ও করুণা

যোগাযোগের জন্যে রাখা যন্ত্রাংশ, ভীতি
সাবলীল ঘেরাটোপগুলো
---
ফলে যা পড়ে থাকে তা এক ভ্রমণ
পার্থক্য থেকে পার্থক্যের মধ্যে

আমাদেরও ভারসাম্যে পায়
কালো ও অনাদি সেই ভারসাম্য

আর অনন্তে কুকুরের ডাক বাজে
প্রতিশ্রুতিহীন প্রস্থানের মত

--
এরপর
অন্দর থেকে ছুটে যাই
আর একটি অন্দর সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে
অটুট, অগভীর
আর এক ভয় পেড়ে ফেলে
অস্তিত্বের কথা খুব মনে পড়ে
হাঁটতে শেখার দিনে
এক ভারসাম্য থেকে অন্য
ভারসাম্যে গড়িয়ে যাওয়ার দিনে
--

Saturday, March 3, 2012

কার তফাৎ কত দূরে
স্বস্তি ও শ্রাবণে মনে পড়ে
অচেনা মুখের পাশে হেলে থাকে
ছায়া, বিপন্ন ষাঁড়
চুবড়ি ভর্তি তুলনা নিয়ে খেলনা বিক্রেতা
আর নির্মাণের কথা মনে পড়ে

আমাকে মনোযোগ করে রেখে দেবে—এও তো বিশ্বাস
দানানো শেকলে
আর যোগাযোগ পর্যন্ত দৌড়ে যাওয়া দেয়াল

শব্দ হয়, ভাষা হয়, নিভৃতিও খানিকটা
আড়াল থেকে অন্য আড়ালে চলাচল হয়
কিছুটা বিস্মৃতি ধরে স্বস্তিকে
শ্রাবণে যাদের মনে পড়ে তারাই তো রবি !
বিহনে যাদের মনে পড়ে – সেই নিজ মুখ
এও তো ঘটনা

তবে শূন্যতা ? সেবাসদনের কাচে গ্রহণযোগ্য পীড়া
আলো ও মন্থর –কিছুটা জটিল হয়ে নিজের কাছেই ফেরা
এইসব শূন্যতা নয়

একটু অস্থিরতা, একটু প্রমাণ
সাপেক্ষ হয়ে ওঠে সহজাত ভরাটের ক্রমে
--
অর্থাৎ মাংসও একটি অনির্দেশ
যে ভাবে বিমূর্ততার কথা ভাবতেও
স্পষ্টতার দরকার হয়
এক বিচ্ছিন্ন অসীম নিজেকে সেলাই করতে করতে
ক্লান্তির সম্ভাবনাগুলো উগরে দেয়
সংহত কোন ভাবনাই তখন আর যথেষ্ট নয়
তারপর নিজেদের সংস্পর্শে এসে আমরাও হাত খুলে রাখি
শাস্তির আভাসগুলি
কোন বিপন্ন বিস্ময় কোথাও আর ক্রিয়াশীল থাকে না

কোন শ্রাবণেই সূর্যের প্রয়োজন বোধ হয় না ।
--
তারপর বুনো জন্তুর মত ছুটে আসে
সত্তা—আর সশব্দে ঘুমের মধ্যে মাথা গলিয়ে দেয়
প্রচ্ছন্ন হয়ে থাকা ছাড়া উপায় থাকে না
ধীর ও প্রচল হয়ে থাকা ছাড়া
শেকল আর কুকুর দুই জরুরী অভ্যাস হয়ে ওঠে

--
নিজেকেই নির্বাসন দিই, পুরু ও ঘোলাটে দ্বীপে
সীমাবদ্ধতার বিরুদ্ধে
সারল্য একটা মীমাংসা মাত্র হয়ে থাকে
নিজেকে আশ্চর্য করে হেসে উঠি
গান গাই
দেয়ালের রঙ নিয়ে কথা বলি
আর তদারক করি আঘাতের, রক্তের
উৎকণ্ঠার
লম্বা প্রেরণাগুলো হেঁটে যায় ছোট ছোট পায়ে ।

Friday, March 2, 2012

এরপরও উত্তরের জন্য অপেক্ষা করে
আমাদের ছায়ারা
সন্দেহের মধ্যে ডুবে যেতে যেতে
ভোর ও আলোর কথা ভাবে
নবীকরণের কথা
এক প্রাচুর্যের কথা
অবধারিত এক প্রাচুর্যের কথা
--
সমস্ত পথই একএকটা সিদ্ধান্ত মাত্র
বিবাহসূত্র ছিঁড়ে
ছুটে যাওয়া
জুয়ার টেবিলে
শিথিলতা আর তার পূনর্বিন্যাস
প্রকল্পের কথাও ভাবি
চামড়ায় দাগানো বিশ্বাস
যেমন মানুষের জন্য অপেক্ষা করে
ঠোঁট উঁচু করে অন্যমনস্কতায়
ঢুকে যায়
--
খুব অতিরিক্ত হয়ে ছিলে
পর্যাপ্ত গতিহীনতায়
ঘুম এসেছিল, মুখে আলো পড়ছিল তবু
ত্রুটি্ময় বাতাস বইছিল
বাতাসের চার কোনা উড়ে যাচ্ছিল

এইসব অস্পষ্টতাই আমাদের চিহ্ন
নির্মানের গায়ে
আমাদের বিভ্রাটই আমাদের প্রকৃত নির্মাণ
ক্রিয়াশীল, নিরন্তর – অনায়াস

--
তবু সত্য নয়, প্রত্যাশা ও প্রত্যাশার মত সব জানলা
স্বাস্থ্যকামী বিপন্ন ভ্রমণ
তোমার আদলে, ভাষা এসে পড়ে
ভাষার স্পর্শ
স্বভাবত কর্কশ, খড়খড়ে
আর তাই দৃশ্যমান
ঘাড়ে, নখে

--
যে ভাবে প্রশ্নপত্রের কাছে
সে ভাবে স্মৃতির কাছে
যাওয়া
যাওয়া লেগে থাকে অবনত ডোরবেলে
পরিকল্পিত
সমস্ত আভাসের কাছে
পুরোদস্তুরে
--
এরপরও ঋণি থাকতে হবে
পদ্ধতির কাছে ?
প্রমাণের জন্য, কয়েক মুহূর্তের স্তব্ধতার জন্য
ঘুমিয়ে পড়তে হবে নির্মাণের মধ্যে ?

ভুল-চুক কোথা যায় ?
কোথা যায় সকালের চিনি ?

খানিকটা অভাবনীয় যা
তার অর্জন কোথায় লেগেছে ?

এস, আমার অমনোযোগে বস
দুদন্ড ঋণি থাকি নিজেদের কাছে
--