কেন এই পাতা

পানুর ইচ্ছা, লেখক হইবেন । বাঙালি, লেখক না হইতে পারিলে নমো নমো করিয়া পাতের সংস্থান যদি বা হয় জাত রক্ষা হয় না - যথা আঁটকুড়া কুলীন । পানু বিস্তর পরিশ্রম করিলেন । দিস্তা দিস্তা রচনাবলী, অমনিবাস চিবাইলেন । প্রথমে কাব্য টানিয়াছিল, কারণ রস - রসে পাঁউরুটি ভিজিল না । পানু ঘটা করিয়া কিছুদিন রবীন্দ্রসঙ্গীত লিখিলেন (ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতিরম্যায়, আট হাজার বাষট্টি টাকার দরজা, খর্চা কে দ্যায় ! অথবা, কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া, চৌমাথার মোড়ে দিব পেন্টুল খুলিয়া) হাউ হাউ করিয়া লোকে মারিতে আসিল । সমস্ত অবজ্ঞা করিয়া পানু লিখিয়া চলিলেন । যদ্যপি পানুর কলমের তোড়ে কাব্যলক্ষী কোঁ কোঁ, সম্পাদকের দপ্তরে চিঁড়া ভিজিল না । অতঃপর পানুর দুঃখে ব্যাবেজ সায়েব কম্পিউটার আবিষ্কার করিলেন । বাজারে ব্লগ আসিল । পানু ব্লগার হইলেন । এই পাতা পানুর পাতা । যা তা ।

Tuesday, May 31, 2011

তিন পৃথিবী ; As promised

রাদ আহমদ / ব্রথেল মালিকের কারপার্ক (ব্রথেল মালিকের কারপার্ক; ২০০৫)

... আর একজন হিস্টিরিয়া-গ্রস্ত মেয়ে
অন্ধকার থেকে উঠে আসা রক্তবমি
ভরে গেল সমস্ত ফ্রিওয়ে – আকাশে ঝুলন্ত তারা
যেন কার কানের দুল – মেয়েটা
হাসতে হাসতে বলল, ঝরনা
ঝরনায় ভরে গেল সমস্ত ড্রেনেজ

মাড়িয়ে মাড়িয়ে আসল এক সাহায্যপ্রার্থী রক্তখেকো কীরকম
আর্তি নিয়ে চেহারায়
তার গাড়ির গ্যারেজে ঘুমাতে থাকা পঞ্চাশটা গাড়ির বাহারে একটা গাড়ির
রেডিও বেজে যায় – জানলা খোলা—যেন মালিক গিয়েছে ... -তে রাস্তার পাশে
রক্তখেকোর ভাষণ ; এখানে চোর আসে – ওই যে দেখ
১৭ ফুট উচ্চতার দেয়াল টম্পকেও চোর আসে

সেদিকে তাকিয়ে – একটা পাখির অবলীলায় আর্তনাদ
কুহু ও কেকা ঝুলে আছে ঝুলে আছে
রাস্তার দুই পাশে ল্যাম্পপোস্ট সংযুক্তকারী তারগুলায়

-- সঙ্গে ইলিশমাছ, রোদে ঝলকানো নদীতে
মোটাসোটা আদুরে বিসনেসম্যান বলে ওঠে কিহে বাহে
ক্যামুন চলতেসে রঙ্গিলা জীবন

আমি বলে উঠি হতাশ ! হতাশ !!
লক্ষ লক্ষ হাঁসের ছানা উড়ে যায় ভোরে
-- তার নীচ দিয়ে দেখ সবুজ গাছেরা দেখ মাদকাসক্তরা দেখ
স্বপ্নে আসক্তরা দেখ – পিলপিল করে তেলাপোকা হয়ে ভেসে যায়

ছোটকালে আঁকা সূর্য যদি হয় তোমার পাকস্থলো
কংকালে অক্ষি গহবর আমি
অন্ধের বৃদ্ধ লাঠির মাথায় দোনোমনা কাঁপছে পৃথিবী

হিস্টিরিয়া-গ্রস্তা হাসছে --- বলছে
সাপ সাপ
ব্রথেল মালিক মুচকি হেসে বলল
খুব সাবধান


মেসবা আলম অর্ঘ্য / মেওয়াবনে গাণিতিক গাধা (মেওয়াবনে গাণিতিক গাধা ; ২০১১)

[ আমার ঘুমের ভেতর থেকে তামাক পুড়িয়ে উঠে যায়
দ্বিতীয় কারো হয়ে যাওয়া যুবতী ]

জ্বরতপ্ত স্বপ্নেও আমি একটা গাধা দেখি যে গাণিতিক
সুনির্দিষ্ট বক্তব্য বয়ে মেওয়া বনে নিয়ে গেছে
এবং সেখানে প্রচুর মেওয়া ফলেছে

গাধা খুব সবুরের জানোয়ার ভেবে
আমার যখন হিংসে হচ্ছে
তখন যুবতীটির সাথে আমার টেলিফোনে কথা হলো
শুনলাম – মুরগী ও পাঁঠার রানের সাথে
সে গভীর ফ্রিজারে শুয়ে আছে – ওখানে উত্তাপ বেশি

আমি জানতে চাই ওখানেও কোনো গাধা আছে কিনা

আমার কথায় যুবতীটি খুব ভয় পেয়ে চমকে ওঠে

আর তার হাত থেকে টেলিফোনটা নাভির উপর পড়ে গলে যায়

আমি স্বপ্নের ভেতর আরেকটা স্বপ্ন দেখতে শুরু করি
সেখানে একমাঠ গাধা
টেলিফোনে কথা বলছে এক গণিতবিদের সাথে


শুভ্র বন্দোপাধ্যায় / বিশ্বাসী মানুষের কথোপকথন (চিতাবাঘ শহর ; ২০০৯)

রোগা, মনখারাপের রুমাল পকেটে নিয়ে চলা মানুষদের সঙ্গে
দেখা যায় ঈশ্বরের কথোপকথন হয় চোখের তলায় জমে থাকা
কালিতে, সোনালি পাথরের গির্জা থেকে বাইরে বেরোলে সে
দেখতে পায় ধীর একটা মেঘলা বেড়াল গির্জার প্রাচীন অব্যবহৃত
অংশের ওপর থেকে তাকে লক্ষ্য করছে

বিশ্বাসী মানুষের সময় পায়ের কাছে সর্বক্ষণ পাক খায়, কালো
গানের পলকা মানুষরা, আমরা, টের পাইনা তরতাজা গ্রীষ্মের
পরিপার্শ্ব, কাঠবেড়ালি, অ্যালুমিনিয়াম রোদ্দুরের চামড়ায়
আলতো হাত বোলাচ্ছেন ঠাকুমা দাদুরা – পুরনো অভ্যেসের
পাশে নাতি নাতনিরা

তারপর সেই রোগা লোকটার এলোমেলো হাতের তালু থেকে
গড়িয়ে নামে বঃসন্ধির রাস্তা, ওই তো জন্মের আতর লুকিয়ে
রয়েছে, সামনে নামা রোব্বারের উপত্যকা ; পাইন মেপলের
আলামেদা পার্ক – অনেক মানুষের সমাগমে, খননে পাওয়া
প্রাচীন ধর্মগ্রন্থের ভেঙ্গে যাওয়া পাতার মত আস্তে আস্তে নমনীয়
হচ্ছে সকাল

অক্ষর মানুষের সব অনুভূতি ধরে রাখতে পারে না, ধবনির
বিমূর্ততার কথা ভাবলে অনেক সময় বোবা হয়ে যেতে হয়,
তাহলে এইসব ছোট উড়ানের দ্রিশ্যগুলো কোথায় যায় ? অন্তত কি
সামান্য দীর্ঘশ্বাস / অশ্রু হয়েও ভাষার দেয়ালে ফুটো করে দিতে
পারে ? ভাষার ফ্রেস্কোয় ? বহু পরে গির্জার দেয়ালের নষ্ট ছবি
উদ্ধার করতে এসে শিল্পীরা যাকে নুনের ছাপ বলে চিহ্নিত
করবেন ...

No comments:

Post a Comment