কেন এই পাতা

পানুর ইচ্ছা, লেখক হইবেন । বাঙালি, লেখক না হইতে পারিলে নমো নমো করিয়া পাতের সংস্থান যদি বা হয় জাত রক্ষা হয় না - যথা আঁটকুড়া কুলীন । পানু বিস্তর পরিশ্রম করিলেন । দিস্তা দিস্তা রচনাবলী, অমনিবাস চিবাইলেন । প্রথমে কাব্য টানিয়াছিল, কারণ রস - রসে পাঁউরুটি ভিজিল না । পানু ঘটা করিয়া কিছুদিন রবীন্দ্রসঙ্গীত লিখিলেন (ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতিরম্যায়, আট হাজার বাষট্টি টাকার দরজা, খর্চা কে দ্যায় ! অথবা, কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া, চৌমাথার মোড়ে দিব পেন্টুল খুলিয়া) হাউ হাউ করিয়া লোকে মারিতে আসিল । সমস্ত অবজ্ঞা করিয়া পানু লিখিয়া চলিলেন । যদ্যপি পানুর কলমের তোড়ে কাব্যলক্ষী কোঁ কোঁ, সম্পাদকের দপ্তরে চিঁড়া ভিজিল না । অতঃপর পানুর দুঃখে ব্যাবেজ সায়েব কম্পিউটার আবিষ্কার করিলেন । বাজারে ব্লগ আসিল । পানু ব্লগার হইলেন । এই পাতা পানুর পাতা । যা তা ।

Thursday, June 2, 2011

কৃষ্ণগোপাল মল্লিকের কবিতা

কৃষ্ণগোপাল মল্লিক কিছুই লিখতেন না সম্ভবত তাঁর পঞ্চান্ন বছরের আগে । প্রথম যৌবনে স্টেটসম্যানে চাকরী করতেন । ফিনফিনে বাবু -- ক্যালিকো ধুতি, ব্রীল ক্রীম । চাকরী ছাড়লেন, লুঙ্গি ধরলেন আর এই বেশেই তাঁর হিল্লি (দিল্লি তিনি কদাপি যান নাই, একবার বর্মায় গেছিলেন ) । কৃষ্ণগোপাল একটি প্রেস চালাতেন, আর একটি প্রকাশনী—অধুনা – যেখান থেকে বেরোত ত্রেতা যুগের ব্লকবাস্টার পত্রিকা “গল্প কবিতা” । সন্দীপন চাটুজ্জের সাথে তাঁর লড়াই ও কৃষ্ণগোপালের বাড়ির সামনে সন্দীপনের খেয়েদেয়ে আমরণ অনশনের গল্পও আজ প্রবাদ । হঠাৎ কেষ্টদা গল্প লিখতে শুরু করলেন, উপন্যাস এবং কী লেখা ! অসাধারণ উইট, রস আর উত্তর কলকাতার ইতিহাস ও ভূগোলের ওতপ্রোত জ্ঞান, মজলিশি অথরিটি – “আমার প্রেমিকারা”, “পথে চলাই দায়”...। কেষ্টদা কবিতাও লিখলেন । নীচে তাঁর দুটি কবিতা—

ভূমিকা

ভাষা আমার চাকর
আর, শব্দগুলো কুকুর ।
ভাষা আমার পা টিপবে জল গড়াবে
বললে তামাক সাজিয়ে দেবে ;
শব্দগুলো, তু করলে, আসবে ছুটে
যেখানে থাক – দোরগোড়া বা ছাদের মাথায়


বয়স্য

আমি জেনেছি
মানে, কথাপ্রসঙ্গে জানা গেছে
স্যান্সক্রিট স্কুলের হেডমাষ্টার সুজিত দাশ
ভিস্তিপাড়ার হোমিও ডাক্তার এন সি দে
কবি উৎপলকুমার বসু
ছাপা-কারবারী আমার মতো ১৯৩৬-এ জন্মেছেন
অর্থাৎ, ১৯৩৬-এ আমরা সকলেই মায়ের দুধ খেয়েছি
সুজিত দাশ একটু আগে ভাগে, আর এন সি দে একটু দেরি করে
তবে, ১৯৩৭-এ চারজনই হামা টেনেছে
যথাক্রমে ফরিদপুর, ঘাটশীলা, রাণাঘাট আর কলকাতায়
এবং ’৪৬-এর রায়টে চারজনেই খুব ভয় পেয়েছিল
নার্ভাস ফিভারও – জ্বর উঠতো ১০০ কি ১০১ । ......
১৯৫৫ নাগাদ যে যার আই এ / আই এস সি সেরে ফেলে
হাঁটা দিলে উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্ছিম – আর
বছর কয়েকের মধ্যেই নেমে পড়লো দু’পয়সা কামাতে ......
কালক্রমে, কেউ কারো প্রীতিভোজে নেমন্তন্ন না খেয়েও
সকলেই বিয়ে-থা করে ঘর-সংসার শুরু করে দিলে ......
তারপর সবই যার যার তার তার মতো ।
শুধু, ওবছর, দ্যাট মীনস, ‘৮৬তে সকলেরই বাড়ির লোক
এক একটা দিন বললে
‘আজ তোমায় একটু পায়েস খেতে হবে, আজ তোমার ৫০ ভর্তি হলো”
লাজুক লাজুক মুখে আমরা পায়েস খেলাম ।

কোথায় যেন পড়েছিলুম—রূপাঞ্জলি না রূপমঞ্চে---
আমাদের উঠতি-বয়েসের দিল-কি-রাণী বোম্বের মধুবালা
সে_ও নাকি জন্মেছিল ঐ ১৯৩৬-এই......
মধুবালা, কিছুদিন হলো মারা গেছে ।

No comments:

Post a Comment