কেন এই পাতা

পানুর ইচ্ছা, লেখক হইবেন । বাঙালি, লেখক না হইতে পারিলে নমো নমো করিয়া পাতের সংস্থান যদি বা হয় জাত রক্ষা হয় না - যথা আঁটকুড়া কুলীন । পানু বিস্তর পরিশ্রম করিলেন । দিস্তা দিস্তা রচনাবলী, অমনিবাস চিবাইলেন । প্রথমে কাব্য টানিয়াছিল, কারণ রস - রসে পাঁউরুটি ভিজিল না । পানু ঘটা করিয়া কিছুদিন রবীন্দ্রসঙ্গীত লিখিলেন (ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতিরম্যায়, আট হাজার বাষট্টি টাকার দরজা, খর্চা কে দ্যায় ! অথবা, কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া, চৌমাথার মোড়ে দিব পেন্টুল খুলিয়া) হাউ হাউ করিয়া লোকে মারিতে আসিল । সমস্ত অবজ্ঞা করিয়া পানু লিখিয়া চলিলেন । যদ্যপি পানুর কলমের তোড়ে কাব্যলক্ষী কোঁ কোঁ, সম্পাদকের দপ্তরে চিঁড়া ভিজিল না । অতঃপর পানুর দুঃখে ব্যাবেজ সায়েব কম্পিউটার আবিষ্কার করিলেন । বাজারে ব্লগ আসিল । পানু ব্লগার হইলেন । এই পাতা পানুর পাতা । যা তা ।

Friday, June 3, 2011

কেদার ভাদুড়ীর কবিতা

কেদার ভাদুড়ী নিয়ে জিজ্ঞাসার জন্ম বন্ধু বাল্মিকী’র সুবাদে । বাল্মিকীর মতে বাংলা ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ট কবি । বহু খোঁজ করি, কে কেদার ভাদুড়ী, কবে লিখতেন । কোথাও খোঁজ পাই নি । অবশেষে মনে হলো তিসমার খান-এর মত, আমেরিকার মত – কেদার একটি মীথ মাত্র । শুভ্র, মানে আমাদের শুভ্র বন্দোপাধ্যায়কে জানাতে শুভ্র বললো –কেদার ভাদুড়ী-কে চেনো না ? বাংলা কবিতার জগতে সব চেয়ে বর্ণময় চরিত্র । উনি, টেলিফোন অপারেটরের চাকরী করতেন ব্রিটিশ এয়ারফোর্সে, তারপর আমেরিকান এয়ারফোর্সে, নৌ-বিদ্রোহের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন – তাঁর প্রত্যেকটি চাকরীই যায় ইনসাবর্ডিনেশান অথবা কোন না কোন প্রতিষ্ঠান বিরোধী কার্যকলাপের জন্য । কলকাতা যাচ্ছি, শুভ্র’র সাথে একবার মনীন্দ্র বাবুর (গুপ্ত) সাথে দেখা করব – উনি কেদার ভাদুড়ীর সব খবর রাখেন । ততক্ষণ এই দু’টি কবিতা পড়ুন ।

ময়ূর

বেশ মনে আছে, বাবা একবার এক ময়ূর পুষেছিলো ।
কারণ ? বাড়িতে গোখরো সাপের বড়ো আনাগোনা, তাই ।
বাবা ওকে কিছুই খেতে দিতো না, তবুও
বর্ষাকাল এলে ফুলে ঢোল, পেখমে পেখমে ছয়লাপ ।

তবে সবসময়ে নয়, মা কাছে গেলে তবেই
এমন পেখম মেলে দিতো, দাঁড়াতো, নাছতো, দেখবার ... ।
প্রথমে বুঝিনি আমি ও বাবা, মা লজ্জায়
বুকের আঁচল টেনে দিয়ে আড়ালে যেতেই, যার নাম রেখেছিলো কাত্তিক ঠাকুর ।

জীবনে এর চেয়েও বড় দেহভোগ, সৌন্দর্যশিকারী (ভিখারি)
কখনো দেখিনি । আমি মার মুখের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে ...

মনে করতো বুঝি স্নেহপরবশ হ’য়ে গেছি আমি
কিন্তু বাবা একদিন রাগে দোনলা বন্দুক নিয়ে গুলি করতেই মা,
যে কোনোদিন বাবার নাম মুখে আনেনি
বলে উঠলো ; রা ঘ ব রা ঘ ব !
আর আমি এই কালকুট্টায় পালিয়ে এসে হবনব হবনব ক’রে
নাম নিয়েছি সৌরভ ! বোঝো !


শেষ প্রেম

যুদ্ধে যাবো কাল । আজ এই হিমসিম ভয়ার্ত সন্ধায় আমি
গৌরবের জয়গাথা পড়ে যাবো শুধু ? নাকি ইতি-
হাস ঘেঁটেঘুটে মিশরীয় সভ্যতার ফ্যারাও আমল থেকে
অ্যাসিরীয়, ব্যবিলনীয়, চৈনিক, মহেঞ্জোদারোর
স্পার্টান পদ্ধতি জেনে নেকড়ে ও রোমুলাস, রোম ... মহাব্যোম
থেকে ফিরে আসে হ্রীং । টেন্টের দরোজায় দেখি পিয়া, অলিম্পিয়া,
আমারই যুদ্ধের ঘুড়ি মদ্য চায়, তার চিহ্ন চক্ষুতে, নাসায়
নিতম্বে উন্মুখ ।

আমি তাই দুই কাস্ক মদ্য নিয়ে ওর সামনে রেখে
বলে উঠি, খা । ও খেলো, খেয়ে নিঃশেষে ফতুর করে দিলো পিপে ।
আমি ওর গা টিপে গা টিপে চুমোয় ভরে দি’ যোনি,
রহস্যের ঘ্রাণ, যা খাজুরাহোর মন্দিরে অক্ষত
আছে আজো, আর বিংশশতাব্দীর এই কালচক্র
শিল্প শিল্প ব’লে ঐতিহাসিকের ক্ষুধা, যদি দুষ্ট, আণবিক
কাল যুদ্ধে যাবো, বর্শাবিদ্ধ মরে যাবো, প’ড়ে যাবো ঘুড়ির পায়ের ক্ষুরে
মৃত্যুর অধিক ।

No comments:

Post a Comment