কেন এই পাতা

পানুর ইচ্ছা, লেখক হইবেন । বাঙালি, লেখক না হইতে পারিলে নমো নমো করিয়া পাতের সংস্থান যদি বা হয় জাত রক্ষা হয় না - যথা আঁটকুড়া কুলীন । পানু বিস্তর পরিশ্রম করিলেন । দিস্তা দিস্তা রচনাবলী, অমনিবাস চিবাইলেন । প্রথমে কাব্য টানিয়াছিল, কারণ রস - রসে পাঁউরুটি ভিজিল না । পানু ঘটা করিয়া কিছুদিন রবীন্দ্রসঙ্গীত লিখিলেন (ভেঙ্গেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতিরম্যায়, আট হাজার বাষট্টি টাকার দরজা, খর্চা কে দ্যায় ! অথবা, কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া, চৌমাথার মোড়ে দিব পেন্টুল খুলিয়া) হাউ হাউ করিয়া লোকে মারিতে আসিল । সমস্ত অবজ্ঞা করিয়া পানু লিখিয়া চলিলেন । যদ্যপি পানুর কলমের তোড়ে কাব্যলক্ষী কোঁ কোঁ, সম্পাদকের দপ্তরে চিঁড়া ভিজিল না । অতঃপর পানুর দুঃখে ব্যাবেজ সায়েব কম্পিউটার আবিষ্কার করিলেন । বাজারে ব্লগ আসিল । পানু ব্লগার হইলেন । এই পাতা পানুর পাতা । যা তা ।

Sunday, February 19, 2017

গোয়েন্দা গল্প

গোয়েন্দার মধ্যবয়স দুদিনের না কামানো দাড়ি, চিবুক ও কানের কাছে শাদা বিছানার পাশে গোয়েন্দার উঠতি যৌবন তার ভেতরে বসে গোয়েন্দা লেখেনচাঁদের কলার ধরে জেরা কর, বাঞ্চোত, জোসনা কোথায়? বিছানায় মাঝবয়েসী গোয়েন্দা,মৃদু হেসে পায়ের ওপর চাদর টেনে নেন আসলে বয়েসের সাথে,তার নড়াচড়ার সাথে চক্রবালকেও অ্যাডজাস্ট করে নিতে গোয়েন্দা জানেন গোয়েন্দা জানেন শূন্যতাকে ঠিক কডিগ্রি আর হেলিয়ে রাখতে হবে, অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে ক্রমে দ্রুত হয়ে ওঠা পেন্ডুলামকে জায়গা করে দিতে

তার গন্ধ ট্র্যাপড হয়ে আছে বরফের মধ্যে আটকে পড়া বাতাসে-- সেই ফুল সেই দেহ তবু মানুষ অপেক্ষা করে বরফের ভেতর দিয়েও একটা শ্বাসের ওঠার, উঠে নামার শ্বাসরুদ্ধ এই প্রতীক্ষার মধ্যে দুএকজন আবহাওয়া নিয়ে কথা বলে, গেলাস ঠিন করে ওঠেগোয়েন্দাও কর্ক খুলে ঢেলে নেন, আলতো চুমুক দেন,  তাঁর চোখ নিবদ্ধ থাকে কর্কের ভেতর গজিয়ে ওঠা ফাঁকফোকরে  গোয়েন্দা বোঝেন, আমাদের মাথার ওপরের ছাদ, চার পাশের দেয়াল সবকিছু, সমস্তসব, প্রশ্ন দিয়েই তৈরী গোয়েন্দা হাতের গেলাস ঘোরাতে ঘোরাতে কোটের ল্যাপেলে হাত রেখে হেঁটে যান সেই প্রান্তসীমার দিকে, সেই জলের মাঝখানে সমাপ্ত হয়ে যাওয়া পয়েন্টের দিকে, যেখানে যাওয়া ও ফেরার পথ দুই শেষ হয়ে আছে গোয়েন্দা সেখানে দাঁড়িয়ে খোঁজ খবর নেন তাঁর  ড্রয়িং রুমের, লনেরযা  ছাড়াছাড়া হরফ হয়েই রয়ে গেছে

২৪ ইঞ্চি রিইনফোর্সড কংক্রিট এই পথে গোয়েন্দা বিশ্বাস রাখেন বিশ্বাস যে পথ দিয়ে মানুষকে সুনিশ্চিত করে নিয়ে যায়,গোয়েন্দার আস্থা সেখানে ফুরিয়েছেতা’ও বহুদিন হল শূন্য এক পবিত্রতার মধ্যে বনপাহাড় দাউদাউ করে মানুষের বসতির গন্ধ ধীরে ধীরে ঢুকে যায় লেবুঘাসে, ইতস্তত স্যালভিয়ায়এক লোহার দোলনায় দ্বন্দ্বের মধ্যে দুলতে দুলতে গোয়েন্দা দেখতে পান-- মানুষ তার শীর্ণতা নিয়ে আলোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আলোতে মানুষের ছায়া ধীরে ও প্রত্যয়ে শেষ হয়ে আসছে

১০
পাথরের ফাটল থেকে উঠেছে, চারা, সাদা গোলাপের বুনো ফল মুয়াজ্জিন আসছেন ত্রস্ত পায়ে, ফজর ডাকছে গোয়েন্দা ঘাসের ভেতর থেকে এ’সমস্ত দেখেন, গোলাপ ফলের ভেতর থেকেগোয়েন্দা দেখেন, অবসাদ ঘুরে বেড়াচ্ছে বাতাসে, অক্ষর হয়ে, বাক্য হয়ে, জমাট বাঁধছে ভেঙ্গে উঠছে, গাছ ছেঁকে নিচ্ছে সেই সব অবসাদ, তাকে উপযুক্ত কার্বন করে নিচ্ছে গোয়েন্দা জানেন মানষের স্বভাব, তার আত্মপ্রবঞ্চন-- সময়ে সময়ে কব্জির শিরা অব্দি কাঙ্খায় দপদপ করা কাঁচের টুকরোকে নিয়েও সে রিফাইনমেন্টের কথা ভাবে, হীরের কথা ভাবে, দুটো-একটা কবিতা লিখে উঠতে পারে গোয়েন্দা জানেন মুহূর্তই সব-- মুহূর্তই জানে খুনীর চেহারা জলরঙ্গের মধ্যে দিয়ে কীভাবে আচমকা স্বচ্ছ হয়ে যায়শ্যাওলার নীচে পাথরের খাদ্য হয়ে থেকে যায়